পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সেলিম মালিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্ন। যা নিয়ে ক্রিকেটবিশ্বে ইতোমধ্যে শোরগোল শুরু হয়েছে। ১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের পাক সফরের একটি ঘটনাকে তুলে এনে শেন ওয়ার্নের অভিযোগ, প্রথম টেস্টে তাকে টাকার বিনিময়ে ম্যাচে খারাপ বল করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন সেলিম মালিক।
করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে হওয়া সেই টেস্টের পঞ্চম দিনে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৭ উইকেট, পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৬০ রান। সেদিন মালিকের প্রস্তাব ছিল স্টাম্পের বাইরে বল করতে হবে ওয়ার্নদের। বিনিময়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা দেবেন তিনি। ওয়ার্নের দাবি, মালিকের সেই ফিক্সিং প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তিনি বলেন, ‘অমন প্রস্তাব শুনে আমি বুঝতে পারছিলাম না কী বলব। আমি অবাক হয়ে চুপ করে বসেছিলাম কিছুক্ষণ। তারপর বলেছিলাম কাল তোমাদের হারাবই।’ ওয়ার্ন জানান, টেস্টটি জেতা পাকিস্তান দলের জন্য যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন সেলিম মালিক।
ওয়ার্ন বলেন, ‘মাঠে নামার আগে আমি যখন টিম হোটেলে ছিলাম তখন মালিককের ফোনকল পাই। তিনি আমাকে তার কক্ষে ডাকেন। আমিও যাই সেখানে। আমাকে দেখে মালিক বলেছিলেন – ভাল খেলা হচ্ছে। আমি বলেছিলাম, কাল মনে হচ্ছে আমরাই জিতব। সেই সময় তিনি বলেন, আমরা হারতে পারব না। তুমি জান না পাকিস্তানের মাটিতে আমরা হারলে কী হতে পারে। আমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে, আমাদের আত্মীয়দের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।’ এমন লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েও সেই টেস্টে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্ন ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচেরসেরা হলেও শেষ উইকেটে ইনজামাম উল হক এবং মুস্তাক আহমেদ ৫৭ রান করে পাকিস্তানকে ম্যাচ জিতিয়ে দেন। ঘটনার ২৭ বছর পর সেলিম মালিকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম নিউজ ডট কমকে শেন ওয়ার্ন বলেন, ‘হ্যা, এটা নিয়ে আগে কখনও কোনো কথা হয়নি। আমি কোথাও বলিনি। কারণ মালিক যখন আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল আমি চমকে গিয়েছিলাম। টাকার অংকটা অনেক ছিল। আপনি এখন যখন ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কথা বলেন, লোকেরা আশা করে যে এটি চলবে না।
আমি শুধু তখন বিষয়টি সেই সময়ের অধিনায়ক মার্ক টেলর এবং কোচ বব সিম্পসনকে জানিয়েছিলাম। ম্যাচ রেফারি জন রিডকে জানিয়েছিলেন তারা।’ প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হন সেলিম মালিক। তিনিই পাকিস্তানের প্রথম ক্রিকেটার যে এই শাস্তি পান। খেলোয়াড় হিসেবে দুর্দান্ত ছিলেন সেলিম মালিক। পাকিস্তানের এ সাবেক অধিনায়ক ১০৩ টেস্টে ১৫ সেঞ্চুরি করেছেন। ৪৩.৭ গড়ে ৫৭৬৮ রান করেছেন তিনি। ওয়ানডেতে ২৮৩ ম্যাচে ৫ সেঞ্চুরিতে ৭১৭০ রান রয়েছে তার।
তথ্যসূত্র: ফক্সস্পোর্টস
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।