অন্যায়ের প্রতিবাদ করাই কাল হলো আবু সুফিয়ানের। ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী বনভোজনের একটি বাস সিদ্ধিরগঞ্জে মোটরসাইকেল আরোহী সুফিয়ানকে চাপা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ করছিলেন তিনি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তার পাশে বনভোজনের বাসটি দাঁড় করিয়ে দলবেঁধে নেমে বেধড়ক পেটানো হয় তাকে। একপর্যায়ে রাস্তায় ফেলে পা দিয়ে তার গলা চেপে ধরা হয়।

আর এতেই সুফিয়ানের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে যায়। তরতাজা যুবকের নিথর দেহ রাস্তায় ফেলে রেখে হুড়মুড় করে ওরা আবার বাসে উঠে সমুদ্র দর্শনের উদ্দেশে যাত্রা করে। ঢাকা-চট্টগ্রামগামী মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় পিডিকে পাম্পের সামনে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটে বুধবার রাত সাড়ে ১০টায়। হামলাকারীরা ঢাকার গুলিস্তান বঙ্গবাজার সিটি প্লাজা মার্কেটের দোকান কর্মচারী। তারা দলবেঁধে কক্সবাজার যাচ্ছিল সমুদ্র স্নানে। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ পরে পথিমধ্যে বাসটি আটক করলেও চালক-হেলপারসহ সবাই পালিয়ে যায়।

নিহত বাইক আরোহী আবু সুফিয়ান সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া বড়বাড়ী পুকুরপাড় এলাকার মৃত গোলজার হোসেন বকুলের ছেলে। নিহতের চাচা জজ মিয়া বাদী হয়ে ওই বাসের চালক-হেলপারসহ ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। জজ মিয়া জানান, আবু সুফিয়ান (২৫) ও তার বন্ধু অনিক সরকার হৃদয় (২৪) বুধবার রাতে মোটরসাইকেলে ঢাকার গুলিস্তান থেকে সাইনবোর্ড হয়ে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন।

তাদের মোটরসাইকেলটিকে (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৪৬৪৯) সিডিএম ট্রাভেলস পরিবহণের বাসচালক চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। বাইক আরোহীরা বাসটিকে থামিয়ে এর প্রতিবাদ করলে বাসের মধ্যে থাকা চালক, হেলপার ও বনভোজনগামী ২০-২৫ জন বাস থেকে নেমে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এ সময় কয়েকজন আবু সুফিয়ানের গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে।

গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা প্রথমে তাকে সাইনবোর্ডে প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুফিয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের সদস্যরা বাসটিকে আটক করলেও চালক ও হেলপারসহ সবাই পালিয়ে যায়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মশিউর রহমান জানান, বুধবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় সুফিয়ান নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের চাচা জজ মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। দোষীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

 কলমকথা/রোজ