মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরের বেউথা পর্যন্ত সম্প্রতি চার লেনের সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। এ সড়কটির নান্দনিক আলোকসজ্জা রাতে পথচারিদের মুগ্ধ করছে। তবে শহরের খালপাড় এখনো দুই লেনের সেতু থাকায় চার লেন সড়কের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শহরবাসী।

এ সেতুতে পৌর এলাকার ৬টি সংযোগ সড়ক মিলিত হওয়ায় সব সময় যানজট লেগেই আছে। পুলিশের রেকর্ড সংশোধনীয় মামলার কারণে নতুন সেতু নির্মাণ করতে পারছে না সড়ক বিভাগ। চার লেনের সড়ক নির্মাণে সাধারণ মানুষ খুশি হলেও দুই লেনের খালপাড় সেতুটি যেনো গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির একপ্রান্ত সেওতা, থানা রোড ও বাসস্ট্যান্ডে যাওয়া আসার তিনটি সংযোগ সড়ক। সেতুটির আরেক প্রান্তে বান্দুটিয়া, বেউথা ও টাউনের সংযোগ সড়ক। মোট ৬ টি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন সেতুটি পার হচ্ছে। চার লেন সড়ক হওয়ার পর এ সড়কে যানবাহনের চাপ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। তবে খালপাড় সেতুটি দুই লেনের সেতু হওয়ায় এই ৬ টি সংযোগ সড়কের যানবাহনগুলোকে সেতু পার হতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে এসব সড়কে চলাচলে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত করা হলেও ভোগান্তি কমছে না।

মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগ জানায়, ১৯৭৬ সালের শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের উপর এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মাঝে মধ্যেই সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে সংস্কার করা হয়। পৌর এলাকার যানজট ও যাতায়াতের সুবিধার্থে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৩৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরের বেউথা মোড় পর্যন্ত ১৫ দশমিক ৬ মিটারের চার লেনে রাস্তা উন্নয়ন করা হয়। কিন্তু প্রায় ৬ বছর আগে জমির রেকর্ড সংক্রান্ত সংশোধনীয় মামলার কারণে খালপাড় এলাকায় নতুন সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

এ সড়কে চলাচলকারী অটোচালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, আগে দুই লেনের সড়কে খালপাড়ে এতক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় নাই। চাল লেন হওয়ার পর রাস্তা বড় হয়ছে, মানুষের যাতায়াত বাড়ছে। গাড়িও আগের চেয়ে বাড়ছে।

তৌফিক এলাহী নামের যাত্রী বলেন, মানিকগঞ্জের উন্নয়নে চার লেনের সড়কটি একটি মাইলফলক। সময়ের দাবি মিটিয়ে সড়কটি প্রশস্ত হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র খালপাড় সেতুটি সরু হওয়ায় সুফল পাওয়ার বদলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

মানিকগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.গাউস-উল-হাসান মারুফ বলেন, খালপাড় সেতুর উত্তর পাশে ট্রাফিক পুলিশের ওই প্রান্তের জায়গা নিয়ে মামলা চলমান থাকায় সেতু নির্মান করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা সমন্বয় সভায় কয়েকজন বিষয়টি উথ্থাপন করলে জায়গা পরিমাপের জন্য জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) প্রধান করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত জায়গা পরিমাপের কাজ ‍শুরু হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান বলেন, খালপাড় সেতুটির উত্তরপাশের জায়গা নিয়ে মামলা চলমান। আদালত এ বিষয়ে যে রায় দিবে তা মেনে নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। তবে জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে পুলিশ সমন্বিত সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিতে প্রস্তুত আছে।

কলমকথা/বি সুলতানা