সুশাসনের জন্য নাগরিক বা সুজন-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সিইসি, কে এম নূরুল হুদাকে ‘খলনায়ক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতো একজন লোককে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়াকে দুর্ভাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

দুইদিন আগে এক অনুষ্ঠানে সিইসি নূরুল হুদার দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সুজন। সেখানে এ মন্তব্য করেন বদিউল আলম।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, এ রকম একজন খলনায়ককে নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। যে আইনটা করা হয়েছে, দুর্ভাগ্যবশত এ রকম লোকদের নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচনে অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে টিআইবির গবেষণা, বিবিসির খবরের বরাত দেন বদিউল আলম। তিনি বলেন, ‘অনেক অনিয়ম হয়েছে। যেগুলোর বিচার হয়নি। বিচার করার অভিপ্রায়ও তাদের ছিল না। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বিদায়ী সিইসি সুজন সম্পাদক বদিউল আলমের সমালোচনা করেন।

বদিউল আলম বর্তমান কমিশনকে ‘অদক্ষ’ আখ্যা দিয়ে ভোটে ‘অনিয়ম’ এবং নির্বাচন ব্যবস্থা ‘ভেঙে দেওয়া’সহ বিভিন্ন অভিযোগ করে আসছিলেন। সে প্রসঙ্গ টেনে নূরুল হুদা সেদিন বলেন, সুজনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ নানা ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই সংগঠনকে কোনো কাজে সম্পৃক্ত করেনি বর্তমান ইসি। সে কারণেই ইসির সমালোচনায় মুখর বদিউল আলম।

শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুজনের সদস্য সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এক কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগসহ কিছু কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন সিইসি। দেশের মর্যাদাপূর্ণ একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে বসে তাকে এমন মিথ্যাচার করতে দেখে আমরা হতবাক। তার এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদেই আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন।’

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বদিউল আলমের ব্যক্তিগত আর্থিক লেনদেনের কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘তাই সিইসি হুদাকেই এসব অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে। একইসঙ্গে জবাব দিতে হবে, তার কাছে এ সম্পর্কে কোনোরূপ তথ্য থাকলে তিনি কেন তা প্রকাশ করলেন না। কেন অভিযোগটি তদন্ত করলেন না। দুর্নীতি দমন কমিশনেই বা কেন তা পাঠালেন না।’

নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলায়ই সিইসির সমালোচনায় পড়েছেন বদিউল মজুমদার, এমনটিও উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সুজন সম্পাদক সিইসির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন কি-না, প্রশ্ন করা হলে বদিউল আলম বলেন, ‘আদালতে গেলে রিমেডি পাওয়া যাবে কি-না? বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা বিবেচ্য বিষয়। তবুও আলোচনা করব। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। অবশ্যই মানহানি হয়েছে। শুধু আমার নয়, পুরো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের মানহানি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সুজন কোনোদিনই বা আমি নিজে বা আমাদের প্রতিনিধি কাজ পাওয়ার ব্যাপারে কোনো আলাপ হয়নি। চিঠিও দেয়নি। চিঠি দেওয়া হলে প্রকাশ কররেন না কেন। এসব বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’