বরিশাল জেলা বাসমালিক গ্রুপের নবগঠিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সামনে দলটির দুপক্ষের হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়েছে।শুক্রবার রাতে নগরীর নথুল্লাবাদে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ভবনের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
তবে পরে মেয়র বাসমালিক গ্রুপের কার্যালয় থেকে নেমে শ্রমিক নেতা দাবিদার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল হোসেন লিটন মোল্লাকে টার্মিনাল থেকে বের করে দেন। তার পরও মেয়রের বক্তব্য চলাকালীন মারামারি হয় দুপক্ষের। যাতে বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ।
এর আগে টার্মিনাল ভবনে প্রবেশমুখেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় কামাল হোসেন লিটন মোল্লাসহ বেশ কয়েকজন আহত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী বাস শ্রমিক রবিউল ও কাওছার বলেন, বরিশাল জেলা বাসমালিক গ্রুপের নবগঠিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে। কমিটির প্রধান উপদেষ্টা বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ টার্মিনাল প্রাঙ্গণে আসেন। তিনি নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সঙ্গে নিয়ে টার্মিনাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় সমিতির কার্যালয়ে যান।
এর কিছুক্ষণ পরেই শ্রমিক নেতা দাবিদার ও সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল হোসেন লিটন মোল্লা মেয়র সাদিককে শুভেচ্ছা জানাতে বিশাল এক মিছিল নিয়ে টার্মিনাল ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় টার্মিনাল ভবনের প্রবেশমুখের সামনে থাকা মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা লিটন মোল্লাকে আটকে দেন।
পরে ব্যাপক হট্টগোল করে টার্মিনাল ভবনের মধ্যে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় লিটন মোল্লা ও তার অনুসারী শ্রমিকদের। এর পর বাসমালিক গ্রুপের কার্যালয় থেকে মেয়র নিচে নেমে এসে লিটন মোল্লাকে টার্মিনাল ভবনের বাইরে বের করে দেন। এ সময় মেয়রের অনুসারীরা লিটন মোল্লা ও তার লোকজনকে মারধর করেন। পরে মেয়রের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে মেয়রের বক্তব্য চলাকালীনও একাধিকবার মারামারি হয় লিটন মোল্লা ও তার প্রতিপক্ষ গ্রুপের মধ্যে।
এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা দাবিদার ও কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল হোসেন লিটন মোল্লার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার অনুসারী জগলুল হায়দার বলেন, উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করেছে কিছু স্বার্থান্বেষী লোকজন। আমাদের বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছে।
বরিশাল জেলা বাসমালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার কেন ওপর থেকে নিচে নামতে হলো। বিশৃঙ্খলা করে লাভটা হলো কী। তাদের কি বরিশালে আর কোনো অবস্থান রয়েছে। আজকে সবাই দেখল কি হয়েছে। তারা তো বাইরের না, আমাদেরই সংগঠনের ছেলেপেলে। এসব জিনিস তো আমি প্রশ্রয় দেব না।
তিনি আরও বলেন, নিজেদের কপাল নিজেরা নষ্ট করছে। যেই হোক না কেন অন্যায় করলে সেই প্রশ্রয় আমি দেব না। আমার ভদ্রতা-সভ্যতাকে দুর্বলতা মনে করা ঠিক নয়। বরিশাল শহরে মারামারির রাজনীতি আমি করি না। চাঁদাবাজমুক্ত থাকবে বাস টার্মিনাল এলাকা।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, বাস টার্মিনালে ঝামেলার কথা শুনেছি। কিন্তু কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গোলাম মাসরেক বাবলুকে সভাপতি ও কিশোর কুমার দে কে সভাপতি করে সম্প্রতি বরিশাল জেলা বাসমালিক গ্রুপের কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এ কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।