বহুলালোচিত মণিরামপুরের সুজাতপুর গ্রামের একই রশিতে মা ও মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। নিহত শিপ্রা রানী মন্ডলের স্বামী কনার মন্ডলকে অভিযুক্ত করে নেহালপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আতিকুজ্জামান যশোর আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন। আসামি কনার মন্ডল সুজাতপুর গ্রামের ননি গোপাল মন্ডলের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ৪ বছর আগে আসামি কনার মন্ডল অভয়নগর উপজেলার দত্তগাতি গ্রামের ভগীরথ মন্ডলের মেয়ে শিপ্রা নারী মন্ডলকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর কনার মন্ডল মণিরামপুরের কুলটিয়া গ্রামের ফাল্গুন মন্ডলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের আদ্রিতা মন্ডল কথা (৩) নামে একটি মেয়ের জন্ম হয়। আসামি কনার মন্ডল নারীআসক্ত হওয়ায় তাদের দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো। যে কারণে কনার মন্ডল প্রায়ই তার স্ত্রী শিপ্রা রানীকে আত্মহত্যা করতে অথবা তার বাবার বাড়ি চলে যেতে বলতেন। ২০২১ সালের ৭ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বামীর পরকীয়ার বিষয় নিয়ে তাদের দু’জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে রান্না ঘরে থাকা দড়ি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার জন্য প্ররোচনা করেন কনার মন্ডল। একইদিন বিকেল ৫টার দিকে কনার মন্ডলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অন্য এক নারীকে দিয়ে শিপ্রা রানীর ভাই চন্দন কুমার মন্ডলের কাছে ফোন করে জানানো হয় তোমার বোন খুবই অসুস্থ। চন্দন কুমার মন্ডল পরিবারের লোকজন নিয়ে এসে দেখেন তার বোন শিপ্রা রানী মন্ডল এবং তার তিন বছর বয়সের মেয়ে আদ্রিতা মন্ডল কথা মৃত অবস্থায় ভাড়া করা বাসায় পড়ে আছে। প্রতিবেশিরা কনার মন্ডলকে ধরে মণিরামপুর থানা পুলিশ পুলিশকে সংবাদ দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কনার মন্ডলকে হেফাজতেন নেয় এবং মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ব্যাপারে মৃত শিপ্রার ভাই চন্দন মন্ডল বাদী হয়ে কনার মন্ডলকে আসামি দিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মণিরামপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে আটক আসামি জড়িত থাকায় নিহতের স্বামী কনার মন্ডলকে অভিযুক্ত করে আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।