বিশুদ্ধ পানির জন্য যুদ্ধ। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্য। দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি সেনাসদস্যদের এ যেন প্রতিদিনের ঘটনা। শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয় তাদের। সেই পানি বিশুদ্ধ করার পরই পান করতে পারেন তারা।
দক্ষিণ সুদানের ওয়াউ প্রদেশে শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশের সেনাসদস্যদের সকালের দৃশ্য এটি। প্রস্তুতি দেখে যে কারো মনে হতে পারে, যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।
সামনে আর্মার্ড পারসোনেল কেরিয়ার, তারপর দুই অফিসারের গাড়ি, মাঝখানে পানির ট্যাংকবাহী দুটি গাড়ি, তারও পেছনে তিনটি গাড়িতে সেনাবাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা।
উঁচু-নিচু কাঁচা রাস্তা ধরে প্রায় ৪০ মিনিট চলার পর বহর থামল একটি গ্রামে। গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত পজিশন নিল সবাই। এরপরই বিস্ময়। ভাঙল ভুল।
ছোট্ট একটি পানির উৎস। এখান থেকেই পানি সংগ্রহ করতে এসেছেন তারা। সেনাসদস্যরা জানান, এখান থেকেই শহরের সবাই পানি সংগ্রহ করেন। এই পানি কখনো কমে না। প্রতিদিন দুই বেলা প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার গ্যালন পানি সংগ্রহ করেন এখান থেকে। সেই পানিই বিশুদ্ধ করে দৈনন্দিন কাজ চালাতে হয় তাদের।
রাজধানী জুবার দৃশ্যও এমনই। সেখানে নিয়োজিত কন্টিনজেন্ট সদস্যদেরও প্রতিদিনই এভাবেই পানি সংগ্রহ করতে হয়। দক্ষিণ সুদানের মানুষ ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে না। সে কারণে নেই নলকূপ বা পানির পাম্প। তাই জুবার পানির একমাত্র উৎস হোয়াইট নাইল।
লে. কর্নেল তানভীর আহমেদ (ব্যানসিইসি, আনমিস, দক্ষিণ সুদান) বলেন, এখানকার মাটি অত্যন্ত শক্ত এবং পাথুরে। এ কারণে ৭০-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত গিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয়।
আর এমন প্রস্তুতি নিয়ে পানি সংগ্রহের কারণ হিসেবে তারা জানান, বিশুদ্ধ পানির সংকট থাকায় বাড়তি সতর্কতা হিসেবেই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েই তাদের বের হতে হয়
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।