সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা কুশুম্ব বালা সরকার। বয়সের ভারে ন্যুব্জ। স্বামী হরিদাস সরকারকে হারিয়েছেন ৩০ বছর আগে। দুটি মেয়ে বিনা রানী সরকার, বেবি রানী সরকার তারাও বিধবা! বড় মেয়ে বিনা সরকারের একমাত্র সন্তান শম্পা সরকার। বড় নাতনি শম্পাকে বিয়ে দিয়েছেন বছর সাতেক আগে। সেও স্বামী-সন্তানসহ আশ্রিত কুশুম্ব সরকারের পরিবারে।

এখন এই নাতনি ও নাতি জামাইয়ের আয়-রোজগারেই চলে কুশুম্ব বালার ৮ জনের বৃহৎ সংসার।

নাতনি শম্পা পেটের দায়ে ইট ভাঙা শ্রমিকের কাজ করেন। নাতি জামাই দুলাল সরকার পেশায় কাঠমিস্ত্রি। প্রতিদিন কাজ থাকে না, তাই নৈমিত্তিক আয় রোজগার ও থাকেনা, ফলে খাবারও জোটে না প্রতিদিন।

শনিবার কুশুম্ব বালা সরকারের বড়িতে গেলে তিনি জানান- কোনো বাড়ি-ঘর ও জায়গা-জমি নেই তাদের। থাকেন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম বাজারসংলগ্ন শুভাষ গাঙ্গুলীর বাড়ির এক কোণে চালাঘর তুলে মাথাগোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন তারা।

অসহায় কুশুম্ব বালা সরকার একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আক্ষেপ করে বলেন, লোকের কাছে হুনি শেখ হাসিনায় নাকি আমাগো মতো গরিব মাইনসেরে জায়গা জমি দিতাছে, ঘর বানাইয়া দিতাছে। একটা ঘরে মাইয়া নাতি পুতি লইয়া অতি কষ্টে থাহি, আমাগো যদি কদ্দুর মাথা গুজনের জায়গা কইরা দিত!

সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সাহায্য সহযোগিতা পান কিনা- জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, সাহায্য সহযোগিতা দিব কইয়া অনেকবার কাগজ পত্র ও ছবি নিছে, কিন্তু তেমন কিছু পাই নাই।

এ বিষয়ে শ্যামগ্রাম ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার রঞ্জন দেবনাথ জানান, মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই না থাকায় আমার ওয়ার্ডের শুভাষ গাঙ্গুলী দাদা দয়াপরবশ ওদের বাড়ির এক কোনে সামান্য একটা চালা তুলে থাকতে দিয়েছেন।

এত অসহায় একটি পরিবারকে কেন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে না, কেন বঞ্চিত হচ্ছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন-আমার পূর্ববর্তী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কতটুকু সহায়তা করেছেন, কিম্বা কেন করেননি সে বিষয়ে আমার জানা নেই। নবনির্বাচিত মেম্বার হিসেবে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা যতটুকু পাই পরিবারটিকে দিতে চেষ্টা করব।