কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় টানা ১০ দিনের বৃষ্টিতে কৃষকের চলতি রোপা বোরো ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। দুধকুমার, কালজানি ও সংকোষ নদের বুকে জেগে ওঠা চরে ও নিম্নাঞ্চলে এ বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন কৃষকরা।
কিন্তু গত ১০ দিনে টানা যেন চৈত্র মাসে আষাড়ের বৃষ্টির ফলে শত শত হেক্টর জমির বোরো ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে গেছে চাষিদের। ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে ভুরুঙ্গামারীর সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফলে নদীর তীরবর্তী ও নিচু অঞ্চলে রোপণ করা বিভিন্ন জাতের ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। চরের নদীভাঙনে অনেক ভূমিহীন, দরিদ্র ও অসহায় চাষি প্রতিবারের ন্যায় বিভিন্ন নদীর ধারে এবং নিম্নাঞ্চলগুলোতে এই বোরো ধান রোপণ করেছিলেন। আশা ছিল ধান উত্তোলন করতে পারলে এ ফসল থেকে লাভবান হওয়ার।
আর কয়েক দিন পরেই আগাম লাগানো কিছু কিছু জমির ধান কেটে কৃষকের ঘরে তোলার কথা। কিন্তু সে আশা এখন নিরাশায় পরিণত হয়েছে।
উপজেলার বলদিয়ার পশ্চিম কেদার, পরশুরামেরকুটি, সতিপুরী, উত্তর বলদিয়া, মোংলারকুটি ও সদর ইউনিয়নের নলেয়া এবং দক্ষিণ তিলাই, পাইকের ছড়া, আন্ধারিঝার, বহলগুড়ি, পাইকডাঙ্গা ও ঝুকিয়া, চরভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকশ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া পানি জমেছে পটোল, ঝিঙা, মরিচ, করলা, শসা, চিচিঙ্গা ও শাকসবজির ক্ষেতে। কোথাও কোথাও ধানের গাছ ও সবজি পচে গেছে।
কৃষকরা জানান, বোরো ধানের আশানুরূপ ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখলেও ভারি বৃষ্টি হওয়ায় সেই স্বপ্ন ভেসে যাচ্ছে। তাদের মতে, হঠাৎ নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ধানের খড় নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন।
চরভুরুঙ্গামারী গ্রামের কৃষক বাবু মিয়াসহ একাধিক কৃষক বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও নদের ধারে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছি। আশা করছিলাম ভালো ফসল পাব। কিন্তু হঠাৎ ভারি বৃষ্টি হওয়ায় ধানগুলো তলিয়ে গেছে। পানি না কমলে সব ধান পচে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, প্রায় ৩০ হেক্টর জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত আছে। এভারে বৃষ্টি হতে থাকলে আর ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।