জামালপুরে এতিমখানার শিক্ষকদের ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি ধামাচাপা দিতে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলার ৮নং বাঁশচড়া ইউনিয়নের কাশারুপাড়া ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমীন হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক সুরুজ্জামান বিদ্যুত এতিমখানার টাকা আত্মসাতসহ জমি ভোগদখল করেছন।

আরও জানা গেছে, কাশারুপাড়া ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমীন হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানাটি সরকারিভাবে অনুমোদন নিয়ে পরিচালিত হয়ে আসলেও গত ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত ৪ লাখ ৭১ হাজার ৩শ ৮০ টাকা ও ব্যাংকে জমাকৃত ৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা, এফডিআর এর ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, বাৎসরিক ধান-চাল কালেকশন, যাকাত, ফেতরা, গোরাবা ফান্ড ও খতমসহ দান অনুদানের ৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা মিলে সর্বমোট ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৩শ ৩৪ টাকা আত্মসাত করেন শিক্ষক সুরুজ্জামান বিদ্যুৎ। এছাড়া ফরিদপুর মৌজায় ৬৫১০ নং দলিলে আরওআর খতিয়ান নং-৫৯, দাগ নং- ৩৪, বিআরএস দাগ নং- ১৩৪ এর সাড়ে ১২ শতাংশ জমি অবৈধভাবে নিজের ভোগদখলে রেখেছেন।

আরও জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে সাবেক কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষক মুনছুর আলীর যোগসাজসে ততকালীন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আবু ইলিয়াস মল্লিকের সহযোগিতায় এতিমের সরকারি ক্যাপিটেশনের ৪ লাখ ৭১ হাজার ৩শ ৮০ টাকা ব্যাংক একাউন্টে ও ক্যাশ খাতায় জমা না করে নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করেছেন। প্রতিষ্ঠানের আয় শূন্য করে তারা হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে নতুন কমিটি গঠিত হলে প্রতিষ্ঠানটি সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়।

নতুন কমিটির তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠানটির ছাদ নির্মাণ করার জন্য মালামাল ক্রয় করার পর দুর্নীতিবাজ শিক্ষক সুরুজ্জামান বিদ্যুৎ স্থানীয় একটি কুচক্রী মহলকে সাথে নিয়ে ছাদ নির্মাণে বাধা দেয় এবং নতুন কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনে। পরে ওই অভিযোগটি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হলেও পূণরায় কমিটি গঠন করার জন্য গত ২০২০ সালের ৭ জুন তারিখে পত্র প্রেরণ করা হয়।

ওই পত্রের আলোকে কমিটি গঠন করে সমাজসেবা অফিসে জমাও দেয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সমাজসেবা অফিসারগণ কমিটি অনুমোদন না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কমিটির সদস্যগণের অজান্তে একটি এডহক কমিটি গঠন করে দেয়। এনিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়েরসহ মামলাও দায়ের করা হয়।

মামলায় বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তত্ত্বাবধায়ক কমিটি গঠন করলে আদালত কর্তৃক ভায়োলেশন মামলা রুজু করা হয়। এদিকে দূর্নীতিবাজ শিক্ষক সুরুজ্জামান বিদ্যুৎ তার লোকজনের সহায়তায় প্রতিষ্ঠানের আলমারি থেকে ব্যাংক একাউন্টের চেক বই, রেজুলেশন খাতাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরিয়ে ফেলে।

এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করা হয়। জিডি নং-৫৮। এদিকে এসব ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে উল্টো উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টায় কাশারুপাড়ার জনৈক মৃত নবীবর রহমানের ছেলে ও দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে থেকে ঢাকা বিমানবন্দরের কুলি হিসেবে কর্মরত মোঃ রফিকুল ইসলামকে বাদী সাজিয়ে দূর্নীতি দমন কমিশনে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানের অত্যন্ত সৎ ও নিষ্ঠাবান সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ ও তার কমিটির সদস্যগণের নামে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।