শাকিল আহম্মেদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেছেন, “পহেলা বৈশাখ বাঙালির একমাত্র সার্বজনীন প্রাণের উৎসব। এটা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে পালন করে। এখানে কোন ধর্মীয় কুসংস্কারের স্থান নেই। এটা বাঙালি জাতির অসাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ।
বাংলা বর্ষবরণের মাধ্যমে আবহমান বাঙালি সাংস্কৃতির পুনজাগরণ লাভ করে এবং জাতিকে সুসংগঠিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।”বাংলা শুভ নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া এলাকায় উপজেলা পরিষদ চত্তরে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীকের নেতৃত্বে বের হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রাটি উপজেলা পরিষদ চত্তর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে মুড়াপাড়া সরকারী কলেজে গিয়ে শেষ হয়। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সার্বজনীন প্রাণের উৎসব উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, “‘বাংলা নববর্ষের চেতনা অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনে প্রেরণা এবং শক্তি হিসেবে কাজ করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। অতীতের গ্লানি, দুঃখ, জরা মুছে, অসুন্দর ও অশুভ পেছনে ফেলে নতুন কেতন উড়িয়ে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনে আরো সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক-এ প্রত্যাশা করি।” মন্ত্রী বলেন, “সর্বজনীন এই উৎসবটি বাঙালির জীবনাচার, চিন্তা-চেতনা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে একাকার হয়ে।
বাংলা নববর্ষ তাই কেবল আনুষ্ঠানিকতানির্ভর কোনো উৎসব নয়; তা বাঙালির ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, শেকড় সন্ধানের মহান চেতনাবাহী দিন।” অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী মহিলালীগের সভাপতি ও তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী। সে সময় মেয়র হাসিনা গাজী বলেন, “পহেলা বৈশাখ বাঙালির চিরায়িত ঐতিহ্য। বাঙালির আত্মপরিচয় ও শেকড়ের সন্ধান মেলে এর উদযাপনের মধ্য দিয়ে।
পহেলা বৈশাখের দিকে তাকালে বাঙালি তার মুখচ্ছবি দেখতে পায়। বৈশাখ আমাদের নিয়ে যায় অবারিতভাবে বেড়ে ওঠার বাতায়নে, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে, অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবো- এবারের নববর্ষে এ হোক আমাদের প্রত্যয়ী অঙ্গীকার।” অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, “স্বাধীনতা পূর্বকালে আমাদের সংস্কৃতি ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধের ওপর বারবার আঘাত এসেছে। নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিকে ভিন্নধারায় প্রবাহিত করতে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে ভিনদেশি সংস্কৃতি। কিন্তু বাঙালি জাতি তা কখনো মেনে নেয়নি। তাইতো প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতি ও জাতিসত্তা বিকাশের প্রবল শক্তি নিয়ে উপস্থিত হয়।” এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন,
রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আতিকুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন আহমেদ,
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল আউয়াল মোল্লা, উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম সহ অনেকে।এদিকে, পরে রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া এলাকায় মুড়াপাড়া সরকারী কলেজ মাঠে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে বৈশাখী মেলা উদ্বোধন করেন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এবং রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী মহিলালীগের সভাপতি ও তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।