শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেওয়া যশোরের যুবলীগের সেই নেতা মাজহারুল ইসলামকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান স্বাক্ষরিত কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্যাডে ১২ এপ্রিল তাঁকে অব্যাহতির ঘোষণা দেওয়া হলেও গত রোববার রাতে বিষয়টি প্রকাশ পায়।
যশোর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ককে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্যাডে বলা হয়েছে, যুবলীগ একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। কিন্তু যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় তাঁকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হলো।
সাময়িক অব্যাহতির বিষয়ে অভিযুক্ত যুবলীগের নেতা মাজহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তিনি এখনো অব্যাহতির কোনো চিঠি পাননি।
এ বিষয়ে যশোর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার বলেন, যশোর সদর উপজেলার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় যুবলীগের নেতা মাজহারুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। গত শুক্রবার রাতে যশোর জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে মাজহারুলকে এ নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু মাজাহারের দেওয়া সেই নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বাংলাদেশ যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশের নির্দেশে গঠনতন্ত্রের ২২(ক) ধারা মোতাবেক তাঁকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করা নিয়ে সম্প্রতি যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে মুঠোফোনে গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি দেন। তাঁদের ওই কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ৬ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ওই কথোপকথনের অডিওতে শোনা যাচ্ছে, যুবলীগের নেতা মাজহারুল বারবার অকথ্য ভাষায় প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে গালিগালাজ করছেন। প্রধান শিক্ষকের উদ্দেশে মাজহারুলকে বলতে শোনা যায়, ‘২৪ ঘণ্টা পর আপনি যদি যশোরে থাকতে পারেন, তাহলে আমি চুড়ি পরে ঘুরে বেড়াবে।’ এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
জিডিতে রবিউল ইসলাম উল্লেখ করেন, যশোর সদর উপজেলার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আগের কমিটির অগোচরে যুবলীগের নেতা মাজহার ও তাঁর সহযোগিরা এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে মনিরুজ্জামানকে নিযুক্ত করেন। এতে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও অভিভাবকেরা ওই কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয় এবং একজন অভিভাবক এ নিয়ে আদালতে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান। এর জেরে মাজহার তাঁর ফোন থেকে কমিটি অনুমোদনের জন্য প্রধান শিক্ষককে আবেদন করতে বলেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক তাঁকে কমিটির বিষয়ে মামলা চলমান জানালে মাজহার প্রধান শিক্ষককে গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি দেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।