মোঃ তাহেরুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দশটি ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ মাঠে দু-চোখ যতদুর যায় ততদুর পর্যন্ত পাঁকা সোনালী ধান ক্ষেত আর ধান ক্ষেত ।
শনিবার (১৪ মে) দুপুর দুইটায় সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সুন্দর খাতা, বালাপাড়া, তিতপাড়া, খগাখড়িবাড়ী, পশ্চিম ছাতনাই, গয়াবাড়ী, ছোটখাতা, চাপানী, নাউতারা, ডিমলাসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায় বিস্তৃর্ণ মাঠের পাঁকা ধান শ্রমিক সংকটের কারনে ঘরে তুলতে পারছে না কৃষক। ধানের ফলন আশানুরুপ হলেও ধান কাটার আধুনিক যন্ত্র পর্যাপ্ত না থাকায় শ্রমিক সংকটে দিশেহারা কৃষক।
শ্রমিকের উপর ভরসা করতে হচ্ছে কৃষকদের ক্ষেতের ধান কাটার জন্য তবুও মিলছে না শ্রমিক । ঘনঘন বৃষ্টির ফলে ধান ক্ষেতে পানি জমাট বেঁধে আছে। জমির ধান কাটা নিয়ে বিপদে আছে এ এলাকার কৃষক। শ্রমিক সংকটের কারনে অনেক কৃষক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধান কাটা শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকুল না থাকায় শ্রমিক সংকটের কারনে কৃষকেরা বিঘা প্রতি (৩০ শতাংশ) জমির ধান কাটতে গুনতে হচ্ছে ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত যা গত বছরের চেয়ে অনেক বেশী। খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক প্রিন্স জানান, ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন করেছি ।
ধান ক্ষেতে হাটু পরিমান পানি। ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এমনিতেই শ্রমিক সংকট আবার ধান ক্ষেতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধ এজন্য বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে তবুও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না । বালাপাড়া ইউনিয়নের কৃষক জিকরুল হক জানান, আট বিঘা জমির ধান ৯৫ ভাগ পেকেছে বিঘা প্রতি (৩০ শতাংশ) জমির ধান কাটতে ৫০০০ টাকা দিলেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ধান কাটা শ্রমিক না থাকায় কোমর পরিমান পানিতে দু- একটা দিনমুজুর আর ছোট ছোট ছেলেদের নিয়ে ধান কাটতেছি যদি আকাশের বৃষ্টি হয় আর উজানের পানি আসে তাহলে ধান তলিয়ে যেতে পারে।
চার পাঁচটি কলা গাছ এক সঙ্গে বেঁধে ভেলা সাজিয়ে ধানের আঠি কোমর পরিমান পানির মধ্যে ক্ষরত থেকে তুলে ডাঙ্গায় তোলা খুবকষ্ট সাধ্য। তিনি বলেন অন্যান্য গ্রামের কৃষকদেরও একই অবস্থা। স্থানীয় বাজারে ধানের বাজার মুল্য আশানুরুপ না থাকায় কৃষকরা হতাশ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, ডিমলা উপজেলায় বোরো মৌসুমে প্রায় ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চলতি বছর এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমানের বোরো ধান চাষ হয়েছে। এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সেকেন্দার আলী বলেন, বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। শ্রমিক সংকট দেখা যাওয়ায় অনেক এলাকার কৃষকেরা আধুনিক যন্ত্রপাতি হারভেস্টার ব্যবহার করে ধান কেটে পাঁকা ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। শ্রমিক সংকটের কারনে ক্ষেতের পাঁকা ধানের ক্ষতি হতে পারে তবে দু-একদিনের মধ্যে শ্রমিক সংকট থাকবে না। কৃষকেরা আমাদের প্রান।
কৃষকেরা এ উপজেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের জনগনের খাদ্য চাহিদা পুরন করতে সক্ষম হবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।