নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সাহসের প্রতীক। সব বাধা-বিপত্তি দূরে সরিয়ে গত বছরের ২৫ জুন উদ্বোধন হয় স্বপ্নের এ সেতুর। তার আগেই নির্ধারণ করা হয় সেতু কেন্দ্র করে সম্ভাব্য মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি।
সেতুর ডিটেইলড ইকোনমিক অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস প্রতিবেদন অনুযায়ী, টোল আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয় বছরে ১৬শ কোটি টাকার কিছু বেশি। তবে প্রথম ছয় মাস ৯ দিনে টোল আদায় হয়েছে ৪১০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক। এই সময়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৮ লাখের অধিক।
জানা যায়, পদ্মা সেতু দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে এক দশমিক ২৩ শতাংশ অবদান রাখার কথা। আর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়ার কথা ২ দশমিক ৩ শতাংশ। সেতু চালুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া ২১টি জেলা সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে চাঙা হচ্ছে এসব জেলা।
পণ্য পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে সহজ। শীত ও বর্ষা মৌসুমে ফেরি পারাপার নিয়ে নেই বিড়ম্বনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য মনোভাব, দৃঢ়তায় দেশের মানুষ শেষ পর্যন্ত এই সেতুর সুফল ভোগ করতে পারছে।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোট টোল আদায় হয়েছে ৪০৯ কোটি ৮৭ লাখ ১০ হাজার ১৫০ টাকা। এই সময়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪১টি যানবাহান পার হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু থেকে মাসে টোল আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় বছরে ১৩৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। বছরের হিসাবে যা ১ হাজার ৬০৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
এ টাকা দিয়ে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও নির্মাণ খরচের ঋণ পরিশোধ করার কথা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের। কোনো উন্নয়ন সহযোগী বা প্রতিষ্ঠানকে নয়, স্বয়ং বাংলাদেশ সরকারকে ৩৫ বছরে সুদসহ ৩৬ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মিত। এর পুরোটাই সরকারের কাছ থেকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ঋণ হিসেবে নেয়।
চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ মোতাবেক ঋণের অর্থ প্রকল্প সমাপ্তির পর বার্ষিক ১ শতাংশ হারে সুদসহ ৩৫ বছরে ১৪০ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া নকশা প্রণয়নের সময় নেওয়া ২১১ কোটি টাকার বিপরীতে পরিশোধ করতে হবে ৩৪০ কোটি টাকা।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।