মাসুদুর রহমান| নওগাঁ: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে ক্ষুধামুক্ত দেশ হিসেবে পরিচিত। এ দেশে ভিক্ষুক খুঁজে পাওয়া যায় না। সরকার বিধবাভাতা, বয়স্কভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা, মাতৃত্বকালীনভাতা, অসহায় গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর বরাদ্দ দিয়ে দেশে নজির সৃষ্টি করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানিভাতা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করে এখন ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সরকার সারা দেশে যত উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পাদিত করেছে সেসব উন্নয়নের কথা দেশের মানুষের মধ্যে প্রচার করতে হবে।’

আজ রোববার দুপুরে নওগাঁর আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, উন্নয়নের সব সূচক অর্জিত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ এর মধ্যেই স্বল্প উন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের প্রচার মাধ্যমগুলোতে এখন গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে সব সূচকে পাকিস্তানকে পিছিয়ে ফেলে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ইমরান খান যখন বলেছিলেন, আগামী ১০ বছরে পাকিস্তানকে সুইডেন বানিয়ে দেবেন। তখন সে দেশের মানুষ বলেছিলেন, আগামী ১০ বছরে সুইডেন নয়, বাংলাদেশ বানিয়ে দেন। আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতের মানুষের মাথাপিছু আয়কে ছাড়িয়ে গেছে। বিগত ১২ বছরে সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যত অর্জন হয়েছে, তার প্রতিটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম।

করোনার টিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘টিকা বাংলাদেশে এসেছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে টিকা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যারা বলেছিলেন, টিকা আনতে পারবে না সেই বিএনপি নেতারা এবং সামলোচকরা এখন গোপনে টিকা গ্রহণ করছে।’ তিনি বিএনপিনেতা এবং সমালোচকদের গোপনে টিকা গ্রহণ না করে প্রকাশ্যে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। এ ব্যাপারে জনগণকে বিভ্রান্ত না করতেও তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

‘বিএনপির নেতারা আরও বলেছিলেন, করোনা পরিস্থিতিতে দেশে হাজার হাজার মানুষ অনাহারে মারা যাবে। কিন্তু সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের কারণে গত এক বছরে একজন মানুষও অনাহারে মারা যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে ছিল। যার ফলে সরকারের মন্ত্রী, এমপি, উপদেষ্টা ও কয়েক হাজার নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলাম। অথচ যারা রাজপথে সরকারের সমালোচনায় মুখর ছিল দেশের মানুষের পাশে তারা ছিল না। করোনা পরিস্থিতিতে যখন শ্রমিক সংকটে কৃষকরা তাদের ক্ষেতের ফসল ঘরে তুলতে পারছিল না তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। দেশে এই ধরনের নজির এর আগে ছিল না।’

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দলীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, যারা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে দলে ভিড়েছেন তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত না করে ত্যাগী এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে আগামী কমিটি গঠন করতে হবে।

সম্মেলনে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা, আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন এবং উপজেলার আটটি ইউনিয়নের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

আত্রাই উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ দত্ত দুলালের সভপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার।

বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, আত্রাই-রানীনগর আসনের সংসদ সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল। সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. আব্দুল মালেক।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে নৃপেন্দ্রনাথ দত্ত দুলালকে সভাপতি এবং মো. আক্কাস আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়