টানা বর্ষণে ও ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। টানা ১০ দিন বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকার পর শনিবার (২১ আগস্ট) থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি মৌসুমে ২ হাজার ২৮৮ হেক্টরের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, নদীতে যদি আর পানি না বাড়ে, বর্তমানে যে পানি আছে তাও স্বাভাবিক হতে অন্তত সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলাতে ৮ হাজার ১২৭ দশমিক ৩৬ বিঘা ও শিবগঞ্জে ৮ হাজার ৯৬৪ বিঘার জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
সবচেয়ে শিবগঞ্জ উপজেলাতে বেশি পরিমাণে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর এলাকার কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, এবারে আমি আমন ধান রোপণ করেছিলাম প্রায় ৭ বিঘাতে, কিন্তু বন্যায় ডুবে গেছে। বর্তমানে ধানের শিষ ফুটে আছে, আর যদি পানি না বেড়ে কমতে থাকে তাহলে হয়তো কিছু ধান ঘরে তুলতে পারবো। না হয়, মাথায় হাত দিয়ে লোকসান গুনতে হবে। শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের সেতারা পাড়ার কৃষক সানাউল্লাহ বলেন, গত বছরে আমাদের দিকে বন্যা কম হওয়ায় এবারও ভেবেছিলাম আমাদের দিকে বন্যা হবেনা। আউশ ধান রোপণ করার পর হঠাৎ করেই পদ্মাতে পানি বাড়তে লাগলো। এক দাগের জমিতে প্রায় ১২ বিঘা ধান লাগিয়েছিলাম। সবই ডুবে গেছে। শিবগঞ্জের ঘুঘুডাংগা এলাকার বদিউজ্জামান বলেন, আমার বাড়ির পিছনে ৩ বিঘা জমি আছে।
সেখানে সবজি ও কলার বাগান আছে। কিন্তু ফলন পাওয়ার আগেই এবারের বন্যাতে সবকিছু ডুবে গেছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল শরীফ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মায় ১১ সেন্টিমিটার ও মহানন্দা নদীতে ৭ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। বর্তমানে পদ্মায় ২২ দশমিক ২১ মিটার ও মহানন্দায় ২০ দশমিক ৬১ মিটার পানি রয়েছে। তিনি বলেন, নদীগুলোতে যদি আর পানি না বাড়ে, তাহলে বর্তমানে যে পানি আছে সেগুলো স্বাভাবিক হতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগতে পারে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।