ফিটনেস বিহীন পরিবহন ও ভাড়া নৈরাজ্যরোধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে বিআরটিএর চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে আকাশ-সড়ক-রেল ও নৌপথকে দুর্ঘটনামুক্ত করার লক্ষ্যে সচেতনতা-গবেষণা ও স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন সেভ দ্য রোড। ২৬ ডিসেম্বর বেলা ১১ টায় সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায় প্রমুখ বিআরটিএর চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে তা অফিসিয়াল-ই গ্রহণ করা হয়।
এসময় সেভ দ্য রোড নেতৃবৃন্দ বিআরটিএর পরিচালক(রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেভ দ্য রোড-এর মহাসচিব শান্তা ফারজানা স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়- ‘সেভ দ্য রোড-এর অঙ্গীকার পথ দূর্ঘটনা থাকবে না আর…’ বাক্যটিকে লালন করে ২০০৭ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে আত্মপ্রকাশ করে সেভ দ্য রোড।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাঁরই যোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন তখন সাধারণ মানুষের অসচেতনতা, চালকদের বিশৃঙ্খলভাবে বাহন চালানো, নিয়ম না মেনে প্রতিযোগিতা, বাইকলেন না থাকা এবং ফিটনেস বিহীন বাহন-বেহাল সড়কপথের কারণে নিত্যদিনই দুর্ঘটনা বাড়চ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যু মিছিল, বাড়ছে আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণকারীর সংখ্যাও। এমন নির্মমতা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সেভ দ্য রোড মাসিক প্রতিবেদন-এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবি হিসেবে বিভিন্ন স্থানে ফুটওভার ব্রীজ-এর ব্যবহার, হেলম্যাট পরিধান, জেব্রাক্রসিং, সিগন্যাল মেনে চলাসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য নিয়মিত ক্যাম্পেইন করে যাচ্ছে।
সড়কপথ, নৌপথ ও রেলপথের দুর্ঘটনামুক্তভাবে পথচলা আমাদের জনগনের অধিকার। সেই অধিকার রক্ষায় মালিক-শ্রমিক-প্রশাসনিক এবং সাধারণ জনগনের সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই। সেই সাথে সেভ দ্য রোড ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নও জরুরী বলে মনে করছি। ৭ দফা হলো- ১. বঙ্গবন্ধু কাপ ফুটবল খেলা শেষে বাড়িতে পাওয়ার পথে মিরেরসরাইতে নিহত অর্ধশত শিক্ষার্থীকে স্মরণিয় করে রাখতে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করতে হবে। ২. ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দিতে হবে। ৩. সড়ক পথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেস বিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতিত চালক-সহযোগি নিয়োগ ও হেলপারদ্বারা পরিবহন চালানো বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ৪. স্থল-নৌ-রেল ও আকাশ পথ দূর্ঘটনায় নিহতদের কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ সরকারীভাবে দিতে হবে এবং হতাহতদের ইন্স্যুরেন্স স্কিমের ব্যবস্থা করতে হবে। ৫. ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬. পথ দূর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা ত্বরান্বিত করণের মধ্য দিয়ে সতর্কতা তৈরি করতে হবে এবং ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের পূর্ব পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশ সহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা-সহমর্মিতা-সচেতনতার পাশাপাশি সকল পথের চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সকল পরিবহন চালকের লাইসেন্স থাকতে হবে। ৭. ইউলুপ বৃদ্ধি, পথ-সেতু সহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ে দূর্নীতি প্রতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে ভাঙা পথ, ভাঙা সেতু আর ভাঙা কালভার্টের কারণে আর কোন প্রাণ দিতে না হয়।
এখানে লক্ষ্যণীয় যে, ভাড়া নৈরাজ্য স্বাধীনতার পর থেকে সাধারণ মানুষের জন্য মরার উপর খড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতবস্থায় ফিটনেস বিহীন পরিবহন ও ভাড়া নৈরাজ্যরোধে কার্যকর পদক্ষেপ এবং পৃথক বাইকলেন বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। যা বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতায় হয়ে উঠছৈ না। আশা করি সকল জটিলতা কাটিয়ে আপনার মত দক্ষ নিবেদিত কর্মঠ মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে মাননীয় সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দুর্ঘটনামুক্ত পথ-এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল দাবি বাস্তবায়ন করতে সদয় হবেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।