দিনাজপুরের খানসামায় আগাম জাতের বোরো ধান কাটার ধুম লেগেছে। বর্তমানে ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অন্য জাতের ধানও সোনালি বর্ণ ধারণ করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে সব জাতের ধানই ঘরে তুলবেন তারা।
উপজেলার ফসলের মাঠে যেদিকেই তাকানো যাবে সেদিকেই কেবল সোনালি ধানের সমারোহ। রোদ আর বাতাসে ফসলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। মাঠ গুলোতে ধান সবুজ বর্ণ থেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করছে।
চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই উপজেলায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের আশানুরূপ ফলন হওয়ায় কৃষক-কিষানির চোখে-মুখে দেখা দিয়েছে আনন্দের ঝিলিক। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, দিগন্ত জোড়া মাঠ সেজেছে সবুজ ও হলুদ রঙ্গে। পরিবর্তন মাঠে ধানের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠছে গ্রামীণ জনপদ। মাঠজুড়ে কৃষকের ফলানো সোনালী রং ধানের ছড়াছড়ি।
জানা গেছে, বোরো ধান রোপনের পর থেকেই ফসলের মাঠে কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, সময় মতো সার, সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে আবাদ হয়েছে বেশ ভালো। তাছাড়াও ফসলের মাঠে তেমন কোন রোগ বালাইও নেই। সব মিলিয়ে এবারের আবাদে সবাই পরিতৃপ্ত। এখন শুধু অপেক্ষা নিরাপদে ফসল ঘরে তোলার।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে এই উপজেলায় ৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। তবে আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে এমন আশা করছেন এ উপজেলার কৃষকরা। এ সময় কৃষক ও দিন মজুররা দলবদ্ধভাবে জমিতে ধান কাটার ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদেরকে নানাভাবে সাহযোগিতা করছেন তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও। ইতোমধ্যে আগাম ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ চলছে।
উপজেলা ঘুরে কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এবার বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। গতবারের তুলনায় আমরা এবার আশানুরূপ ভালো ফলন পাবো।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক কৃষক এই প্রতিবেদককে জানান, এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। এমন সুন্দর ধানের ফলন দেখে মনটা খুশিতে ভরে উঠেছে।
আঙ্গার পাড়া ইউনিয়নের কৃষক জবেদ আলী বলেন, এবারে বোরো ধানের আবাদ বেশ ভালো হয়েছে। রোগ বালাইও তেমন একটা নেই। বর্তমানে আবহাওয়াও অনুকূলে রয়েছে। এই অবস্থা বিদ্যমান থাকলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। তবে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্য পুরোদমে শুরু হবে ধান কাটা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব রায়ের সাথে কথা হলে। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। আবাদও হয়েছে বেশ ভালো। তেমন কোন রোগ বালাইও নেই। আবহাওয়াও বর্তমানে অনুকূলে রয়েছে। ইতোমধ্যেই আগাম জাতের ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষক । আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।