বরগুনার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর প্রায় ৬ শতাধিক পয়েন্টে আইন লঙ্ঘন করে রেণু শিকার করছেন মৎস্যজীবীরা। এতে ধ্বংস হচ্ছে কোটি প্রজাতির দেশীয় মাছের পোনা, জলজ প্রাণী ও মাছের ডিম। রোববার (৩ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, বিষখালী নদীতে প্রায় ১০ হাজার জেলে মশারি জাল দিয়ে রেণু শিকার করছেন। জেলে আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘অভাবের তাড়নায় রেণু শিকার করছি। সপ্তাহে একদিন ব্যবসায়ীরা ট্রাক নিয়ে রেণু কিনতে আসেন। তখন যার কাছে বেশি দাম পাওয়া যায়, তার কাছেই রেণু বিক্রি করি। সাধারণত বাগদা রেণু প্রতি শত ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
আর গলদা রেণু বিক্রি হয় ৫০-৬০ টাকায়।’ আরেক জেলে সনদ রায় বলেন, ‘প্রতিদিন যে রেণু শিকার করি, সপ্তাহ শেষে বিক্রি করলে প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজার টাকা আয় থাকে। বছরের চার মাস (চৈত্র থেকে আষাঢ়) রেণু শিকার করি। বাকি ৮ মাস দিন মজুরের কাজ করি। তবে, পোনা শিকারে রোজগার বেশি হয়।’ অন্যান্য মাছের ক্ষতির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লাভ করতে চাইলে একটু ক্ষতি হবে, এটা জানি। কিন্তু এই দিয়েই আমাদের সংসার চলে।’ এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ‘রেণু শিকার করলে মাছের বংশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
কারণ রেণু শিকারের সময় কোটি প্রজাতির মাছের ডিম ও পোনা মারা যায়। এটা চলতে থাকলে সাগর ও নদী মাছ শূন্য হয়ে যাবে। জেলেদের সচেতন করার জন্য মৎস্য অধিদপ্তর থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু কিছু জেলে এখনও রেণু শিকার করছেন। আমরা বেশ কয়েকটি অভিযানও করেছি। আমাদের প্রথম ধাপ ছিল, জেলেদের সচেতন করা। প্রত্যন্ত জেলে পল্লীতে রেণু শিকারের কুফল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তারপরও যদি জেলেরা রেণু শিকার করে মাছ ধ্বংস করতেই থাকে তাহলে কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।’
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।