নাটোরের গুরুদাসপুরে মা সেলিনাকে (৪৫) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে ববি আক্তারকে (২০) গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন ববি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নাটোরের পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত গৃহবধূ গুরুদাসপুর পৌর সদরের উত্তর নারিবাড়ী মহল্লার নজরুল ইসলামের স্ত্রী।

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি লিটন কুমার সাহা জানান, মাস তিনেক আগে মালয়েশিয়া প্রবাসী খালাতো ভাই সোহেলের সাথে ববির বিয়ে হয়। স্বামী দেশে ফেরার আগে তাকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য মাকে চাপ দেন ববি। কিন্তু মা সেলিনা তাতে পাত্তা না দিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। এমনকি ক্ষোভ প্রকাশ করে মরতেও বলতেন। তাই তিনি বিরক্ত হয়ে সোমবার বিকেলে নিজের মাকে ঘুমের ওষুধ সেবন করান। মা ঘুমিয়ে গেলে ব্লেড দিয়ে তার গলা কেটে হত্যা করেন মেয়ে ববি। হত্যার ঘটনা জানতেই এএসপি সার্কেল জামিল আখতার ও গুরুদাসপুরের ওসি আব্দুর রাজ্জাক সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এসময় বাড়ি তল্লাশি করে ববির ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে তার মায়ের সমস্ত গহনা ও নগদ ১৬ হাজার ৭০০ টাকাসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ব্লেড উদ্ধার করা হয়। তখন ববিকে সন্দেহমূলকভাবে জিজ্ঞাসা করলে তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।

স্থানীয়রা জানান, স্বপ্না ও ববি দুই বোন। স্বপ্নার বিয়ে হয়েছে অন্যত্র। এর আগে ববির বিয়ে হয় তার ফুফাতো ভাই সোহেলের সাথে। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। পরে রাজবাড়ির পাংশা উপজেলার প্রবাসী খালাতো ভাইয়ের সাথে তার বিয়ে হয়। দ্বিতীয় স্বামীর নামও সোহেল। এলাকায় এ ধরনের লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড আগে ঘটেনি। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, সেলিনার লাশ নাটোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের বড় ভাই সুলতান আহমেদ খান গুরুদাসপুর থানায় ববির বিরুদ্ধে বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ববিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।