জাহাঙ্গীর আলম,টাঙ্গাইলঃ

টাঙ্গাইলের নোয়াই নদীর ওপর নির্মিত সেতু ভেঙে পড়ায় চার বছর ধরে ৬ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। শুস্ক মৌসুমে শুকিয়ে যাওয়া নদীতে বিকল্প রাস্তা তৈরি করে চলাচল করলেও প্রতি বর্ষায়ই চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। সরেজমিনে জানা যায়, নোয়াই নদীর নাগরপুর উপজেলার বিহালী খামার গ্রামের অংশে এলজিইডি নির্মিত সেতুটির উত্তর পাশের মাটি সরে গিয়ে একটি গার্ডার ভেঙে পানিতে পড়ে গেছে। রেলিং ভেঙে গেছে।

দীর্ঘদিনেও সংস্কার বা পুননির্মাণ না হওয়ায় সেতুর ভিমগুলোর ভঙ্গুর দশা। এ সেতু দিয়ে বিহালী খামার, জাঙ্গালিয়া, সিংদাইর, কাশিনারা সহ আশপাশের গ্রামের মানুষ চলাচল করত। নোয়াই নদীর এ সেতু পার হয়ে ওই সব গ্রামের লোকজন পাশের মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলা শহরে যাতায়াত করতেন। বিহালী খামার গ্রামের মাসুদ রানা, আব্দুর রহমান, গোলজার হোসেন সহ অনেকেই জানান, সেতুটি নির্মাণের পর ৬-৭ বছর পারাপারের উপযুক্ত ছিল।

২০১৭ সালের বর্ষায় প্রথমে সেতুর উত্তর পাশের একটি অংশ সামান্য দেবে যায়। স্থানীয়রা দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ তা মেরামত করেনি। পরের বছর বর্ষায় ভিম সহ সেতুর মধ্যাংশ নদীতে দেবে যায়। ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বর্ষায় এক বাঁশের সাঁকো ও শুকনা মৌসুমে চলাচলের জন্য নদীর বুকে রাস্তা তৈরি করে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে এলঅকাবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। কাশিনারা গ্রামের শাহ আলম, রহিম মিয়া কালাচাদ মিয়া জানান, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় আশপাশের ৬ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।

শ’ শ’ কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে উঠাতে না পেরে কমমূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হন। বেশি ভাড়া দিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে সঠিক দামে বিক্রি করতে না পেরে আবার বেশি ভাড়ায় ফিরিয়ে আনতে হয়। সিংদাইর গ্রামের আবদুল খালেক জানান, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় গ্রামগুলোর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে থাকে। যানবাহন চলাচল না করায় তারা দীর্ঘ পথ ঘুরে বিকল্প রাস্তায় পায়ে হেটে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মুসলেম উদ্দিন জানান, সেতুটি পুননির্মাণ বা সংস্কারের জন্য তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলজিইডি’র বারান্দায় ঘুরেও কোন সুফল পাননি।

বার বার অভিযোগ ও প্রতিকার চাইলেও তারা কোন সমাধান দিতে পারেনি। নাগরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, ২০০৮ সালে ভাদ্রা-বিহালী খামার সড়কে নোয়াই নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি ২০১৭ সালের বন্যায় ভেঙে পড়ে। ভেঙে যাওয়া সেতুটি সংস্কারের সুযোগ নেই। আগে ভেঙে যাওয়া সেতুটি অপসারণ করতে হবে। পরে নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হবে।