স্টাফ রিপোর্টার: যশোর শহরতলী শেখহাটি তরফনওয়াপাড়ায় (স্কুলপাড়া) রিক্তা রানী শীল (২৯) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে তাকে শ্বাসরোধ ও পিটিয়ে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যার প্রচার দেয় অভিযুক্ত স্বামী গৌতম শীল। সোমবার রাতের কোন এক সময় হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। তবে মৃতের পা মাটি ছুঁয়ে ছিল। যেকারণে আত্মহত্যার প্রচার দিয়েও লাভ হয়নি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন অভিযুক্ত স্বামী গৌতম কুমার শীলসহ পরিবারের সন্দেহভাজনরা গা ঢাকা দিয়েছে। অভিযুক্ত গৌতম মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের ধারণা আত্মহত্যা নয়, গৃহবধূ রিক্তাকে হত্যা করা হয়েছে। শহরের মাড়ুয়া মন্দিরের পাশে পতিতালয় পাড়ার একটি ঘরে গৌতমের সেলুন রয়েছে।

এদিকে আজ মঙ্গলবার(২ মার্চ) সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ সময় মৃতের পা মাটি ছুঁয়েছিল। এলাকার কতিপয় ব্যক্তি পুলিশকে ম্যানেজ করে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাহ্ করার চেষ্টা করেন কিন্তু তালবাড়িয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তাদের প্রস্তাবে রাজী হননি। পুলিশ সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ যশোর আড়াইশ বেড হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
এদিকে মৃতের শ্বশুর বাড়ির লোকজন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করলেও মৃতের ভাই সজিব শীলের দাবি, সম্প্রতি যৌতুকের জন্য সংসারে অশান্তি করছিল গৌতম। টাকা না পেয়ে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালিয়েছে। তিনি মোবাইলে ছবি ধারণ করে গণমাধ্যম কর্মীদের দিয়ে প্রশ্ন করেন দেখুন তো এই হত্যাকে কিভাবে আত্মহত্যা বলবেন ? মৃতের দেহের অর্ধেক অংশ মাটি ছুঁয়েছিল।
স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গৌতম দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করে আসছিলেন। তার সন্দেহ ছিল ছোট ভাই বিশ্বজিত শীলের সাথে তার স্ত্রী রিক্তার পরকীয়া রয়েছে। এনিয়ে সংসারে প্রায়ই অশান্তি হতো। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজিত শীলকে বিয়ে দেন পরিবারের লোকজন কিন্তু তাতেও গৌতম শীলের সন্দেহ কাটেনি। তার বদ্ধমুল ধারণা ছিল আগের মতোই তাদের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এই অশান্তির কারণে গৌতম তার স্ত্রীকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে সূত্রের দাবি।
এদিকে নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর মিলন হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনা শুনে মৃতের বাড়িতে গিয়ে দেখেন পরনের শাড়ি গলায় পেচানো অবস্থায় ঘরের আড়ার সাথে দেহ ঝুলে আছে। আর পা হাটু ভাজ অবস্থায় নিচে মাটি ছুঁয়ে রয়েছে। তবে হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা কী।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রিক্তারানী শীল নামে এক গৃহবধূর মৃত দেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে এখনি বলা যাচ্ছে না এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
ময়না তদন্তকারী কর্মকর্তা ডা. আহম্মেদ তারেক শামস্ জানান, প্রাথমিক ভাবে রহস্যজনক মৃত্যু মনে হচ্ছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে হত্যা না আত্মহত্যা সে বিষয়ে পরিস্কার বুঝা যাবে।