খুলনার পাইকগাছার মিনহাজ নদীর ২৫১ একর বদ্ধ জলমহলে সুইজ গেট দিয়ে লবণ পানি উঠানোকে কেন্দ্র করে ইজারাদার ও এলাকাবাসী মুখোমুখি অবস্থানে।

দুপুরে ইজারাদার লবণ পানি উঠাতে গেলে এলাকাবাসী সেটি বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী জনাব রাজু হাওলাদার সরেজমিনে গিয়ে পানি উঠানো বন্ধ করেন।

লবণ পানি উঠাতে গেলে বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

জানা যায় ,পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ২৫১ একরের মিনহাজ নদীর বদ্ধ জলমহল। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কিলোমিটার।

এ নদী দিয়ে দুই উপজেলার ৪৬ মৌজার প্রায় শতাধিক গ্রামের পানি নিস্কাশন হয়। এ বদ্ধ জল মহলটি সরকারের নিকট থেকে ইজারা গ্রহণ করেন বন্ধন মৎসজীবী সমবায় সমিতি।

কানাখালী গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি বলেন, ইজারাদার কর্তিক অপরিকল্পিত ভাবে জোয়ার পানি ওঠানোর কারণে নদীর মুখে পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির মৌসুমে পানি নিস্কাসন বাধাগ্রস্ত ফসলহীন হাজার হাজার বিঘা জমি। হাজার হাজার কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নদীর মিষ্টি পানি ব্যবহার করে শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে তরমুজসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করছে।

মিনহাজ চকের বসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন,মিনহাজ নদীর মুখ ভরাট হওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গোয়ালবাড়িয়া চকের বিজন মন্ডল বলেন, নদীটি যাহারা ইজারা নিয়েছে তারা জোয়ার উঠানোর কারণে পলি জমে নদীর মুখে প্রায় ২০০ বিঘা নদী ভরাট হয়ে গেছে।

শিক্ষক গোবিন্দ মন্ডল বলেন, লস্কর, চাঁদখালী, গড়ইখালী ও কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হয় এ নদী দিয়ে। গড়ইখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম কেরু বলেন, আমি লবণ পানি উঠানোর পক্ষে নই। আমি মিষ্টি পানি জন্য আনন্দোলন সংগ্রাম করছি।

ইউনিয়নের কৃষক ও কৃষিকে বাঁচাতে মিনহাজ নদীতে লবণ পানি উঠানোর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। চাঁদখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাদা আবু ইলিয়াস বলেন, কপোতাক্ষ নদ ভরাট হওয়ার কারণে আমার ইউনিয়নের পানি সরানোর একমাত্র পথ মিনহাজ নদী। এ নদীর মিষ্টি পানি দিয়ে কৃষকরা ফসল ফলায়।যদি নদীতে লবণ পানি উঠানো হয় তাহলে ফসল নষ্ট হবে। লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, বদ্ধ জল মহলটির মুখ পলি পড়ে ভরাট হওয়ার কারণে এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়না। বর্ষা মৌসুমে আমার ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্মসৃজন প্রকল্পের লোক দিয়ে ভরাট হওয়া অংশ খননের প্রস্তুতি চলছে।

এমন সময় ইজারাদার স্লাইজ গেট দিয়ে জোয়ারের লবণ পানি উঠাতে গেলে এলাকাবাসী বাঁধা দেয়। ইজারা গ্রহীতা বন্ধন মৎসজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক বিধান রায় জানান, নদী থেকে সেলো মেশিন দিয়ে পানি তোলার কারণে নদীতে পানি কমে গেছে।

সে কারণে আমরা জোয়ারের পানি উঠানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে দাবী করেছিলাম।পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী রাজু হাওলাদার বলেন, বদ্ধ জলমহলটি ইজারা নিয়েছেন বদ্ধ ভাবে মৎস্য চাষের জন্য।