নজরুল ইসলাম,নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ

দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে থ্রি-হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নসিমন, করিমন চলাচল একাধিকবার বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। কিন্তু, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কগুলোতে নির্বিন্নে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও মোটরচালিত রিকশা। ফলে, সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর সংখ্যা কোনোভাবেই কমানো যাচ্ছে না।দিন যত যাচ্ছে নিদিষ্ট থ্রি-হুইলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ যেন দেখা কেউ নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের দু পাশের বেশির ভাগ জায়গা ব্যাটারি চালিত থ্রি-হুইলার দখল করে আছে। নান্দাইল উপজেলার কানুরামপুর পশ্চিম বাস স্ট্যান্ড ও পূর্ব বাস স্ট্যান্ডের দুপাশে বেশিভাগ জায়গা দখল করে রয়েছে এসব ব্যাটারি চালিত থ্রি-হুইলার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নান্দাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও নান্দাইল চৌরাস্তা অবৈধ থ্রি-হুইলারের ছড়াছড়ি। এত বেশি যানবাহন যে রাস্তা পার হওয়ার মতও জায়গা পাওয়া যায় না।

এদিকে নান্দাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, নরসুন্দা ব্রিজ,চৌরাস্তা বাস স্ট্যান্ড, হাসপাতাল মোড়,কানুরামপুর, মধুপুর,দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় অবৈধ থ্রি-হুইলারের স্ট্যান্ড বসিয়ে বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের নামে ২০,৩০,৪০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। কোন কোন জায়গায় শ্রমিক ইউনিয়নের রশিদ আবার কোথাও রশিদ ছাড়া এসব টাকা আদায়ে চাঁদাবাজি করছে একটি মহল।

নান্দাইল হাইওয়ে থানা,হাইওয়ে পুলিশ গাজীপুর রিজিয়ন এর উদ্যোগে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, নসিমন, ইজিবাইক,অটোরিক্সা, লেগুনা সহ যেকোন ধরনের থ্রি-হুইলার চালানো অপরাধ ও সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৮৯(২) ধারা অনুয়ারী ৩ মাসের কারাদন্ড বা অনাধিক ২০.০০০ হাজা টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় অপরাধ সম্বলিত মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সাইট বোর্ড টানানো হয়েছে। থ্রি-হুইলার চালক এইব সাইন বোর্ড সম্পর্কে অবগত নয়।

অটোচালক আ.মজিদ বলেন,’আমাদের বলে কি লাভ? যারা অবৈধ গাড়ীর বাজারে বিক্রি করে তাদের টা বন্ধ করতে বলেন। আমাদের তো পেটের দায়ে রাস্তায় নামতে হয়। মহাসড়কে তো আসতে চাই না যাত্রীর চাপে আসতে হয়। মহাসড়কে এসেও কষ্ট চাঁদা দিতে হয় পৌরসভা ও বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নকে।’

আফিয়া আক্তার শাহানা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন,’অটোগুলো মহাসড়কে চলাচল নিষেধ তা জানি। কিন্তু চলাচল তো আমাদের করতে হবে। বাস তো আর ৩-৪কিলোমিটার পরে থামিয়ে লোক নিবে না। তবে অটোগুলো অদক্ষ ও শিশু ড্রাইভারের সংখ্যা বেশি। এগুলোর ব্যাপারের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

নান্দাইল হাইওয়ে থানার (ওসি) মাসুদ বলেন,’ আমরা অবৈধ থ্রি-হুইলার বন্ধের জন্য সাইনবোর্ড,মাইকিং ও জনসচেতনতা মিটিং করছি তবুও কেউ মানছে না। থ্রি-হুইলার গুলো তো দুর্ঘটনা কারন।’
থ্রি-হুইলার বন্ধের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,’ রাজনৈতিক ও লোকাল ভাবে সমন্বয় করে সমাধান করতে হবে। অনেকেই আবার পৌরসভা থেকে নাম্বার প্লেট নিচ্ছে। আমরা তো চাইলেই বন্ধ করতে পারছি না।’

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবুল মনসুর বলেন, ‘এইগুলো শুধু নান্দাইলে নয় সারা দেশেই একই সমস্যা। ময়মনসিংহ শহরেও থ্রি-হুইলার চলছে। আমাদের একার পক্ষে এইগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। তবে আমরা বিভিন্ন সময় অভিযান করে মহাসড়কে অবৈধ যানজট মুক্ত করতে চেষ্টা করি।’