মোঃ শরিফ উদ্দিন, শেরপুর প্রতিনিধি: শীত মানেই পিঠা-পুলির উৎসবে মেতে ওঠা। শীত এলেই গ্রামে ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠা তৈরির ধুম। আর শহরের ব্যস্ত জীবনে পিঠার স্বাদ পেতে যেতে হয় শহরের ফুটপাতের পিঠার দোকান বা গ্রামে। আর এই বাঙালির শীতের পিঠার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে শেরপুর পৌর লেডিস ক্লাব আয়োজন করেছিল দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসবের। এ উৎসবের আয়োজন হওয়ায় উপচে পড়া ভিড় ছিলো পৌরসভার প্রাঙ্গনে।

২৫ জানুয়ারী বুধবার বিকেল ৪ টায় শেরপুর পৌরসভা কার্যালয় মাঠে ফিতা কেটে পিঠা উৎসরের উদ্বোধন করেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান বিপিএম। আয়োজকদের উপদেষ্টা ও পিঠা উৎসবের সভাপতি পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, পুলিশ সুপার পতœী ও পুনাক সভাপতি সানজিদা হক, লেডিস ক্লাবের সভাপতি শাহীনা আক্তার পারভীন, সহ সভাপতি সাবিহা জামান শাপলা, সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুমানারা লিপিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপ¯ি’ত ছিলেন। এর আগে পৌরসভা মিলনায়তনে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পিঠা উৎসবে মেতে উঠেছে শেরপুর পৌরসভা

পিঠা উৎসবে নানা রঙ ও ঢংয়ের বাহারি পিঠার মোট ১৮ টি স্টল ছিলো। আরএ বিভিন্ন নামের পিঠা দর্শনার্থীদের মন কেড়েছে। স্টলগুলোর বাহারি ফুলের
নামে বিশেষ করে কেয়া, মাধবীলতা, গোলাপ, রজনীগন্ধা, ক্যামেলীয়া, হাসনাহেনা, অপরাজিতাসহ নানা বাহারি নাম। আরও ছিলো হৃদয় হরণ, দুধ চিতই, সাগুর লস্করা, নয়নতারা, ডালের বরফি, হেয়ালি পিঠা, পাটিসাপটা, নারকেল পুলি, দুধ পুলি, তালের পিঠা, মাছ পিঠা, মালপোয়া, ঝালপোয়া,
সুজির পিঠা, মাংসের সমুচা, ডিম পিঠা, মুগ পাকান, পুডিং, পায়েস, পানতোয়াসহ প্রায় এক শত রকমের বাহারি নামের পিঠা বিক্রি ও প্রদর্শিত হয়। নারী উদ্যোক্তা লাবনী আক্তারের স্টলে পিঠার পাশাপাশি হাঁসের মাংস ও চালের রুটিও বেশ বিক্রি হয়।

পিঠার স্টলগুলোতে বিক্রিও হয় বেশ। জেলার বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সৌখিন পিঠা প্রেমী নারীরা পিঠা উৎসবের স্টলে তাদের বাহাড়ি পিঠার
সমাহার নিয়ে বসেন। পিঠা উৎসবে বড়দের পাশপাশি শিশু-কিশোররাও বেশ আনন্দ উপভোগ করেছেন। অনেকেই সরাসরি পিঠা উৎসবের মাঠে গরম গরম পিঠা তৈরী করে ক্রেতাদের হাতে তুলে দেন। এ উৎসব শুরু হয় বিকেল ৪টায় আর শেষ হয় রাত ৮ টায়। এসময় শহরের বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে কেউ বা আবার বন্ধুদের নিয়ে দলে দলে ভিড় করে পিঠা উৎসবে। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্টল পরির্দশনের পাশপাশি বিভিন্ন স্টলের নানাসব বাহারি পিঠার মজা উপভোগ করেন। পিঠা উৎসবের এ সময়টা যেন বন্ধু-বান্ধব আর প্রিয়জনদের মিলন মেলায় পরিনত হয়।
অনেকে দল বেঁধে বন্ধুদের নিয়ে সেলফি তোলাতেও মেতে উঠে। পিঠা উৎসবের আয়োজকরাও এ উৎসব প্রাণের উৎসব হওয়ায় বেশ খুশি। আর
ঐতিহ্যবাহী এ পিঠা উৎসব প্রতিবছর করার আশ্বাস আয়োজকদের। এরপর থেকে বড় পরিসরে সারাদিনব্যাপী পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হবে
জানান এ আয়োজক উপদেষ্টা পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। পৌর লেডিস ক্লাবের সভাপতি শাহীনা আক্তার পারভীন জানান, আমরা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা সম্পর্কে শহরের বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের পরিচিত করতে আমাদের এ উদ্যোগ।