মোঃ রাকিব হাসান, ঢাকা ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফেরা মুনুস্পুল পেপার ও পেপার প্রসেসিং এর শেয়ার সংখ্যা গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে রাতারাতি ডিএসই পরিবর্তন করে, যদিও এর মধ্যে কোম্পানি কোনো প্রকার রাইট বা বোনাস শেয়ার ইস্যু করেনি।

এ ব্যপারে অনুসন্ধানে জানা যায়, মুনুস্পুল পেপার কোম্পানি লিঃ ও পেপার প্রসেসিং এন্ড প্যাকেজিং কোম্পানি লিঃ গত ১৩ জুন ২০২১ তারিখে ওটিসি মার্কেট থেকে ডিএসই’র মূল মার্কেট এ ট্রেডিং এর অনুমতি পায় এবং ডিএসই কোম্পানি দুটি’র পরিশোধিত মূলধন প্রদর্শন করে যথাক্রমে ৩.০৪ কোটি ও ৩.৩৬ কোটি, সে হিসেবে মুনুস্পুল এর শেয়ার সংখ্যা দেখানো হয় ৩০ লক্ষ ৪৮ হাজার এবং পেপার প্রসেসিং এর শেয়ার দেখানো হয় ৩৩ লক্ষ ৬০ হাজার।

কিন্তু হঠাৎ কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে ডিএসই কোম্পানি দুটির পরিশোধিত মূলধন সংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদ করে যেখানে দুই কোম্পানির শেয়ার তিনগুন দেখানো হয়েছে, এতে সাধারণ বিনিয়োগকারিগণ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে শেয়ার বিক্রি করতে থাকে ফলে দুইদিনে কোম্পানি দুটি প্রায় ১৯ শতাংশ দর হারায়।

হঠাৎ পরিশোধিত মূলধন ও শেয়ার বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে একই ব্যবসায়িক গ্রুপভুক্ত উভয় কোম্পানির কোম্পানি সচিব মুস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৮ সালে উভয় কোম্পানির ২০০ শতাংশ হারে বোনাস ডিভিডেন্ড এজিএমে পাশ হয়েছিল। এরপর ২০১৯ সালে কোনো ডিভিডেন্ড না দিলেও ২০২০ সালের জন্য পেপার প্রসেসিংয়ের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১১ শতাংশ এবং বিডি মনোস্পুল পেপারের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৮ শতাংশ বোনাস শেয়ার এজিএমে পাস হয়েছিল। কোম্পানি সচিব আরও জানান, মূল শেয়ারবাজারে থাকা কোম্পানির বোনাস শেয়ার এজিএমে পাস হলে তা শেয়ারহোল্ডারদের বিও অ্যাকাউন্টে জমা করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির অনুমোদন লাগে না। কিন্তু ওটিসির কোম্পানির এজন্য অনুমোদন নিতে হয়।

২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উভয় কোম্পানির এজিএমে ওই বছরের জন্য ২০০ শতাংশ করে পাস হয়েছিল। ওই বোনাস ডিভিডেন্ডের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করলেও তৎকালীন বিএসইসি তা অনুমোদন করেনি। এরপর ২০১৯ সালের জন্য দুই কোম্পানির কোনোটিই ডিভিডেন্ড দেয়নি। তবে ২০২০ সালের জন্য পেপার প্রসেসিং কোম্পানির জন্য ১১ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১১ শতাংশ বোনাস এবং বিডি মনোস্পুল পেপারের জন্য ৯ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৮ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড পাস হয়েছিল। মুস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি বছর উভয় বোনাস ডিভিডেন্ডের অনুমোদন দিলে ২০২০ সালের বোনাস ডিভিডেন্ড গত ২০ জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ২০০ শতাংশ বোনাস গত ৭ মার্চ শেয়ারহোল্ডারদের অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে। এ তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জকে গত এপ্রিলে এবং পুনঃতালিকাভুক্তির সময়ও দেওয়া হয়েছে।

এমনকি তালিকাভুক্তির সময় সমুদয় শেয়ারের হিসাবে লিস্টিং ফি নিয়েছে। কিন্তু মোট শেয়ারের প্রকৃত তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেনি। সিডিবিএল এর তথ্য বিশ্লেষণে কোম্পানি সচিবের কথার সত্যতা পাওয়া যায়। মূলত ডিএসই’র গাফিলতির কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ডিএসই প্রায়ই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার হালনাগাদে বিলম্ব করে, মূল্যসংবেদনশীল তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করে। এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থাসমূহের কঠোর নজরদারি জোরদার করা প্রয়োজন যেন ভবিষ্যতে