নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে তরুণদের বিনিয়োগে আগ্রহী ও আর্থিকভাবে সচেতন করতে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো “তারুণ্যের উৎসব–২০২৫”-এর একটি বিশেষ আয়োজন।

ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) আয়োজিত “গ্রাহক সেবা পক্ষ” কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই অনুষ্ঠানে ‘তরুণদের পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণ ও বিনিয়োগ’ বিষয়ে আলোচনা হয়।

রবিবার (০২ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীনস্ কমপ্লেক্স বিল্ডিং অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিবি’র পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আলী, অধ্যাপক ড. আবু সাদেক মো. কামরুজ্জামান, আইসিবি’র সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং আইসিবি’র মহাব্যবস্থাপকগণ।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিবি, আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পিএলসি, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ও আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং তরুণ বিনিয়োগপ্রত্যাশী অংশগ্রহণকারীরা।

অনুষ্ঠানটি পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। এরপর অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন আয়োজকরা।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “তরুণরাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের চালিকাশক্তি। তাদের অর্থনৈতিকভাবে দক্ষ ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে পুঁজিবাজারের জ্ঞান অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঞ্চয়কে বিনিয়োগে রূপান্তরিত করে দেশের উৎপাদনশীল খাতকে শক্তিশালী করতে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম।”

তিনি আরও বলেন, “পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ কেবল অর্থ উপার্জনের পথ নয়, এটি জাতীয় উন্নয়নের একটি কার্যকর মাধ্যম। তরুণদের মধ্যে যদি এই সংস্কৃতি গড়ে ওঠে, তবে আগামী প্রজন্ম একটি আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গঠনে বড় অবদান রাখবে।”

বিশেষ অতিথি নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আইসিবি সবসময়ই জনগণের আস্থা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই, তরুণরা যেন ঝুঁকি বিবেচনা করে, জ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে। এজন্য আইসিবি নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।”

তিনি আরও জানান, “বর্তমানে দেশে প্রযুক্তিনির্ভর লেনদেন ব্যবস্থা আরও সহজ ও স্বচ্ছ হয়েছে। তরুণদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ—তারা চাইলে স্মার্টফোন থেকেই বিনিয়োগ কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে।”

অন্যদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক জ্ঞান নয়, আর্থিক জ্ঞানও অর্জন করা জরুরি। পুঁজিবাজারে সঠিকভাবে বিনিয়োগের কৌশল জানা থাকলে তরুণরা নিজস্ব অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলতে পারবে এবং দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখতে পারবে।”

আলোচনা শেষে অনুষ্ঠিত হয় এক উন্মুক্ত সেমিনার, যেখানে উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তরুণ বিনিয়োগকারীরা অতিথিদের নিকট নানা প্রশ্ন করেন। অতিথিরা তরুণদের জিজ্ঞাসার বিস্তারিত উত্তর দেন এবং বাস্তবমুখী পরামর্শ প্রদান করেন।

পরে অতিথি ও অংশগ্রহণকারীরা আইসিবি ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে একটি তথ্য ও সেবা স্টল পরিদর্শন করেন।

যেখানে উপস্থিত তরুণ ও আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ পদ্ধতি, শেয়ার লেনদেন, ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলা এবং সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন বিনিয়োগ সুযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা পুঁজিবাজার ও মার্চেন্ট ব্যাংকিংয়ের গুরুত্ব, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, আইসিএমএল-এর পণ্য ও সেবার পরিচিতি, এবং জাতীয় অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এছাড়াও তরুণ প্রজন্মকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।