শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনরত শিক্ষার্থীরা তাদের দাবীতে অনড় রয়েছেন। অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১০ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এদের একজনও এখনো অনশন ভাঙেননি।

ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করছেন শাবিপ্রবির ২৪ শিক্ষার্থী।

গত দুইদিন ধরে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে পারছেন না, ধাপে ধাপে আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। সহমর্মিতা জানাতে এসে ঘরে ফেরার আকুতি জানিয়েও ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে ২৪ শিক্ষার্থী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশন শুরু করে। ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা একফোঁটা পানিও পান করবে না, এমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় তাদের অনশন আজ তৃতীয় দিনে। অসুস্থ হয়ে পড়াদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তীব্র শীতের মধ্যেও ভিসির বাসভবনের সামনে অনশনকারীসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর থেকেই অনশনরতদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মুমূর্ষু অবস্থায় ৮ শিক্ষার্থীকে সিলেট শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ২ জন ছাত্রী ও ৬ জন ছাত্র রয়েছেন।

এদিকে কয়েক দফায় শিক্ষকবৃন্দ বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন এবং অনশন ভাঙানোর জন্য অনুরোধ করছেন কিন্তু শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল এসেও তাদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রদর্শন করেন এবং আবাসিক হল ও বাসায় ফিরে যেতে বলেন কিন্তু এতেও সাড়া দেননি শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ বলেন, অনশনকারী ২৪ জনের মধ্যে ৮ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের গুরুতর সমস্যা দেখা না দিলেও দুর্বলতা আর ব্লাড প্রেশার নেমে যাওয়ার সমস্যা আছেই। কিন্তু অনশন ধরে রেখেছেন তারা।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল বের করেছে। সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মিছিলটি ভিসির বাসভবনের থেকে শুরু হয়ে সারা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে আবারও অনশনস্থলে আসে। এসময় শিক্ষার্থীরা ভিসি বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

পরবর্তীতে রাত ৩টায় মুক্তমঞ্চে ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ করে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, অনশনকারী শিক্ষার্থীদের কিছু হলে ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে দায়ভার নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গত রোববার শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার পর থেকেই ভিসির বাসভবনের সামনে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে।

কলমকথা/বি সুলতানা