❝মুখোশের অন্তরায়❞

‘মুখোশধারী মানুষ’ এই কথাটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত, যার কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত হয় কিছু মানুষের আশা কিংবা স্বপ্ন ভঙ্গের করুন দৃশ্য…! জিতে নেয় সফলতার বদলে হতাশা…! সর্বশান্ত হয়ে নিজ জীবনে বপণ করে অবিশ্বাসের বীয…!

কাজের খাতিরে কিংবা প্রয়োজনের তাগিদে প্রতিদিন নানা ধরনের মানুষের সাথে আমাদের চলতে হয়। কিছু সময় শুধু প্রয়োজনেই নয় অপ্রয়জনেও চলতে হয়। এরই মধ্যে কিছু মানুষের সাথে সু-সম্পর্ক তৈরী হয়। আর এখান থেকেই শুরুটা হয়। আমাদের বেশীরভাগ মানুষের মধ্যে একটি সহজ প্রবৃত্তি কাজ করে যে, যাচাইবাছাই না করেই বিশ্বাস! অতঃপর দীর্ঘশ্বাস সেই সাথে ভাবতে শুরু করে ❝মানুষকে বিশ্বাস করাই কি পাপ…! নাকি জীবনে চলার পথে মানুষকে বিশ্বাস করতেই হয়…!❞

যদিও নিজেকে স্বান্তনা দেওয়ার জন্য আমাদের অজুহাতের অন্ত নেই যা বলা বাহুল্য। আর যাই হোক আমরা যে কাজটি খুব সহজে করতে পারি তা হলো অদৃষ্ট কিংবা ভাগ্যের নির্মম পরিহাস মনে করে বিষয়টি ভুলে যেতে অথবা অন্যকারও গর্দান বা ঘাড়ের উপর দোষটা চাপিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে।

এমন সব ঘটনার পেছনে আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা না নিতে পারা। কোন ভুলের কারনে কেন ঘটনাটি ঘটলো সেটি খুঁজে না দেখে বিষয়টি সেখানেই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে নিজেকে স্বান্তনা দেওয়া। এরপর আরও ভিন্নধর্মী পূর্বের চেয়েও ভয়ানক অন্য কোন প্রতারণার শিকার হওয়া যার জন্য আমরা মোটেও প্রস্তুত থাকি না…! পরিশেষে পুনঃরায় সেই রায় মেনে নিয়ে অদৃষ্টের হাতে তুলে দেওয়া!

তাই মানুষকে বিশ্বাস করুন তবে অবশ্যই বিশ্লেষণপূর্বক ও যথেষ্ট সময় নিয়ে। যে কোন মানুষের হাতে আপনার মূল্যবান বিশ্বাসটা তুলে দেওয়ার আগে এটা মাথায় রাখুন সে আপনাকে যা দেখাচ্ছে তা দৃশ্যমান বাস্তব না হয়ে মরিচীকাও তো হতে পারে…!

জনৈক ব্যক্তিকে বলতে শুনেছিলাম ❝যদি একটি কাঁচের গ্লাসের অর্ধেকটাতে পানি ভরা হয় তবে বাকি অর্ধেকে বাতাস ভরা থাকে। আমরা যখন কাউকে বিশ্বাস করি তখন শুধু পানিটা দেখতে পাই। বাতাসটাও দেখতে পাই তবে প্রতারিত হওয়ার পরে। ❞ কেউ যদি আপনার উপকার করে তবে ভাবতে যাবেন না সেটা নিঃস্বার্থ। সল্পমেয়াদে যদি আপনার কাছে দৃশ্যমান কোন স্বার্থ নাও থাকে দীর্ঘমেয়াদে কোন স্বার্থ থাকবে এটি নিশ্চিত থাকতে পারেন।

তবে সল্পমেয়াদে বিশ্বাসের মুখোশ পরিহিত মানুষগুলো চেনা কিছুটা সহজ হলেও দীর্ঘমেয়াদে বিশ্বাসের মুখোশ পরিহিত মানুষ গুলো চেনা বড্ড কঠিন…!

পরিশেষে বলতে চাই, আপনার নিশ্চয় রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনের পেছনে লেখা দেখেছেন- ❝নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন❞ কিংবা ❝গতিসীমা সীমিত❞। হ্যাঁ এই ছোট্ট বাক্যটি হতে পারে আপনার চারপাশের মুখোশধারী মানুষদের কাছে থেকে বেঁচে থাকার মূলমন্ত্র।

❝সম্পর্ক যত ঘনিষ্ট হোক সেটাকে নির্ধারিত সীমা অথবা সেইফ জোনের মধ্যে রাখুন নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখুন আর্থিক ও মানসিক ভাবে ভাল থাকুন…❞

আরিফ হুসাইন
২১-০৮-২০২২