

শরীরের যেকোনো স্থানের ব্যথা স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ব্যাঘাত ঘটায়। বিশেষ করে কোমর, পিঠ ও নিতম্বের ব্যথা অনেকের জন্য যন্ত্রণাদায়ক। চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধরনের ব্যথা শুধুমাত্র অস্বস্তির কারণ নয়, অনেক সময় তা জটিল রোগের ইঙ্গিতও হতে পারে।
ভারতের অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রবীরকুমার দত্ত জানিয়েছেন, নিয়মিত আঁটসাঁট জিন্স বা ট্রাউজার পরা এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা বসে কাজ করার ফলে নিতম্বের প্রধান পেশি ‘গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস’ দুর্বল হয়ে যায়। এতে ব্যথার ঝুঁকি বাড়ে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ অবস্থা ‘অ্যাভাস্কুলার নেক্রোসিস’ নামে পরিচিত, যেখানে পেশিতে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটে। এর ফলে ধীরে ধীরে আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাসের নিচে থাকা আরও দুটি পেশি—গ্লুটিয়াস মিডিয়াস ও গ্লুটিয়াস মিনিমাস—একটি নির্দিষ্ট বিন্যাসে কাজ করে। এই ভারসাম্য নষ্ট হলে নিতম্বে তীব্র ব্যথা তৈরি হয় এবং কখনও কখনও রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকিও দেখা দেয়। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, অতিরিক্ত আঁটসাঁট জিন্স পরা কিংবা স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ গ্রহণ করলে সমস্যাটি আরও বাড়তে পারে।
প্রতিকার
চিকিৎসকদের মতে—
- ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে (চিকিৎসকের পরামর্শ সাপেক্ষে)।
- গরম বা ঠান্ডা সেঁক নিলে সাময়িক আরাম পাওয়া যায়।
- নিয়মিত স্ট্রেচিং ও উপযুক্ত ব্যায়াম পেশিকে সক্রিয় রাখে।
- বসার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা জরুরি, যাতে নিতম্বে চাপ কম পড়ে।
- গুরুতর ক্ষেত্রে ‘আর্টিকুলার কার্টিলেজ রিপ্লেসমেন্ট’ বা ‘জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট’ সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
চিকিৎসকরা তাই সতর্ক করে বলছেন, ফ্যাশনের জন্য আঁটসাঁট জিন্সে অভ্যস্ত হওয়া কিংবা দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। শরীরের সংকেত অবহেলা না করে সময়মতো চিকিৎসা নিলে ব্যথা থেকে মুক্তি মিলবে এবং সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব হবে।

ডেইলি কলমকথার সকল নিউজ সবার আগে পেতে গুগল নিউজ ফিড ফলো করুন
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।