সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনাচারেও বদল এসেছে। মানুষের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন এসেছে। নতুন নতুন রোগ দেখা দিয়েছে। জটিল রোগগুলোর মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। আর বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লিভার ক্যান্সার। যকৃত হচ্ছে আমাদের পেটের ওপরের দিকে ডান পাশে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেটি খাবার হজম করতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে।

লিভারে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার তৈরি হতে পারে। লিভার ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমা, যা প্রধান ধরনের লিভার কোষে (হেপাটোসাইট) শুরু হয়। অন্যান্য ধরনের লিভার ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে ইন্ট্রাহেপ্যাটিক কোলাঞ্জিওকার্সিনোমা ও হেপাটোব্লাস্টোমা। লিভার কোষ তাদের ডিএনএতে পরিবর্তন (মিউটেশন) বিকাশ করলে লিভার ক্যান্সার হয়। একটি কোষের ডিএনএ হলো সেই উপাদান,

যা শরীরের প্রতিটি রাসায়নিক প্রক্রিয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়ে থাকে। ডিএনএ মিউটেশন এই নির্দেশাবলির পরিবর্তন ঘটায়। আর এর ফলে কোষগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে বাড়তে শুরু করে এবং অবশেষে একটি টিউমার তৈরি করতে পারে, যার দ্বারা ক্যান্সার কোষ শুরু হয়। লিভার ক্যান্সারের কিছু কারণ আছে। এটি বোঝার কিছু লক্ষণও আছে। আসুন জেনে নিই সেই সম্পর্কে—

১. হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাস (এইচবিভি) বা হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাসের (এইচসিভি) দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণের কারণে লিভার ক্যান্সার হতে পারে।

২. সিরোসিসের কারণে লিভারে দাগের টিস্যু তৈরি হয় এবং সেটি লিভার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।

৩. বংশে কারো এটির ইতিহাস থাকলেও লিভার ক্যান্সার হতে পারে। ৪. চর্বি জমে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

৫. বেশি অ্যালকোহল গ্রহণ করলে লিভারের অপরিবর্তনীয় ক্ষতি হতে পারে এবং আপনার লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

৬. দীর্ঘসময় ধরে ছত্রাক যুক্ত বা পচা-বাসি খাবার খেলে লিভার ক্যান্সার হতে পারে।

৭. ডায়াবেটিসের কারণেও অনেক সময় লিভার ক্যান্সার হতে পারে।

যেসব লক্ষণে বুঝবেন লিভারে ক্যান্সার—

১. অকারণে ওজন কমে যাওয়া

২. ক্ষুধা কমে যাওয়া

৩. পেটের ওপরের দিকে ব্যথা

৪. বমি হওযা বা বমি বমি ভাব

৫. দুর্বলতা বা অতিরিক্ত ক্লান্তি

৬. পেট ফুলে যাওয়া

৭. চোখ ও ত্বক হলুদভাব দেখানো এবং জন্ডিস লিভারে ক্যান্সার হলে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই এগুলোর কোনোটা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

তথ্যসূত্র: মায়োক্লিনিক ডট ওআরজি