শরীরে অবসাদ-ক্লান্তি দেখা দিলেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আমরা চাইলেই ঘরে বসে ঠিক করতে পারি এসব শারীরিক দুর্বলতা। এজন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যসম্মত খাবারদাবার যা আপনাকে কিছুটা হলেও সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করবে।

শরীরের দুর্বলতা কাটাতে ভিটামিন-সি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন-সি’র অভাব পূরণে বেশি করে টকজাতীয় ফল যেমন— কমলা, লেবু, আঙুর খেতে হবে। এছাড়া কিউই, লেটুসপাতা, পালংশাক ও মরিচ বেশি খেতে পারেন। এছাড়াও দুধ, ডিম, কলা ও কাজু বাদামেও দূর হয় শারীরিক দুর্বলতা। আজ এমনই সব খাবার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা কিছুটা হলেও আপনাকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করবে-

দুধ:

নানা ধরনের স্বাস্থ্যকর ভিটামিনে ভরপুর দুধ। এই দুধ আমাদের দেহের দুর্বলতা খুব সহজেই দূর করে। শরীর সুস্থ রাখতে সবচেয়ে ভালো খাদ্য হলো দুধ। যখনই শরীর খারাপ লাগবে তখন এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খান। দুধের মধ্যে ২/৩ ডুমুর ফল দিয়ে তা সিদ্ধ করে সেই দুধ খেতে পারেন। এই ডুমুর মিশ্রিত দুধ দেহের দুর্বলতা দূর করে। দুধের ক্যালসিয়াম উপাদান আমাদের দেহের হাড় মজবুত করে। প্রতিদিন শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে বাটার মিশিয়ে দুই বেলা খেতে পারেন।

ডিম:

ডিমে আছে আয়রন, ফলিক এসিড, প্রোটিন, ভিটামিন এ, পেন্টথেনিক এসিড এবং রিবফ্লেভিন। এ জন্য প্রতিদিন একটি করে ডিম খান দেহকে সুস্থ রাখেন। প্রোটিন থাকে ১২.৫৬ গ্রাম, ফ্যাট থাকে ৯.৫১ গ্রাম। এছাড়া ফসফরাস থাকে ১৯৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৩৮ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক থাকে ১.২৯ মিলিগ্রাম। ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোটিন ও কুসুমে থাকে ভালো ফ্যাট, আয়রন ও ভিটামিন। শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি, হাড় শক্ত করতে ও মেধার বিকাশে ডিম খুবই কার্যকর।

কাজুবাদাম:

কাঠ-বাদামের মতো কাজু বাদামও দেহের জন্য উপকারী। ওজনও বাড়ায় না। মজাদার কাজু বাদাম উচ্চ প্রোটিন, আঁশ ও স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যা শরীরকে সুস্থ রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। ২/৩টি কাজুবাদাম, কয়েকটি কিশমিশ ও একটি ডুমুর সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে পানি থেকে কাজুবাদাম, কিশমিশ ও ডুমুর আলাদা করে নিন এবং পানিটি পান করুন। সরিয়ে রাখা জিনিস গুলো পেস্ট করে খেয়ে ফেলুন। আপনার সঙ্গে সবসময় কিছু কাজুবাদাম রাখুন। যখনই কোনো কারণে দুর্বল লাগবে তখনই কয়েকটি কাজুবাদাম খেয়ে নিন। কাজুবাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই , যা আমাদের শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে এবং শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার লক্ষণগুলোর সঙ্গে লড়াই করে আমাদের সুস্থ রাখে।

কলা:

কলাতে আছে পটাশিয়াম ও মিনারেলস উপাদান যা শক্তি বৃদ্ধি করে। কলার ফাইবার উপাদান আমাদের দেহের রক্তে গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রনে রাখে। কলার মধ্যে আছে প্রাকৃতিক চিনি, ফ্রুকটোস, গ্লুকোজ যা খুব দ্রুতই আমাদের দেহে শক্তি যোগায়। তাছাড়া কলা বিভিন্ন গুণাগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল। এর পুষ্টিগুণ অধিক। এতে রয়েছে দৃঢ় টিস্যু গঠনকারী উপদান যথা আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ। কলা ক্যালরির একটি ভালো উৎস।