ভাষা হলো সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যম। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বাহন। শিল্পকর্ম ও অগ্রগতির ধারক। ভাষার ওপর তাই কোনো আঘাত এলে সমগ্র জাতি শঙ্কিত হয়ে ওঠে। হয় আতঙ্কিত। উদ্যোগ নেয় সেই আঘাত প্রতিহত করতে। যুক্তিবুদ্ধির সহায়তায় তা সম্ভব হলে ভালো। তা না হলে অগ্রসর হয় রক্তাক্ত পথে।
এগিয়ে যায় আত্মদানের পথে। পূর্ববাংলায় যে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয় ১৯৪৮ সালে, তার মাধ্যমে এই জাতির সংকল্পই প্রতিফলিত হয়। একুশে ফেব্রুয়ারি এরই চূড়ান্ত রূপ। একুশে ফেব্রুয়ারির জন্ম একদিনে হয়নি, হয়নি এক যুগেও। এছাড়া একুশে ফেব্রুয়ারির শুধু ভাষা সংরক্ষণের আন্দোলন ছিল না।
ভাষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জীবনবোধ, সাহিত্য-সংস্কৃতি স্বাতন্ত্র্য, জাতির আধ্মাতিক সত্তা সংরক্ষণের সংগ্রামের মূর্ত রূপ ছিল একুশে ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের জনগণের কাছে তাই এ দিনের গুরুত্ব এমন হূদয়গ্রাহী। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দুটি ভূখণ্ডের দুটি ভিন্ন ভাষার জাতিসত্তাকে মিলিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম থেকেই মাতৃভাষাকে কেন্দ্র করে সূচনা হয়েছিল আন্দোলনের। আর এই ভাষা আন্দোলনকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হয়।
১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে এই দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করা হতো। এই ইতিহাস বাংলাদেশের অনেকেরই জানা। কিন্তু এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরির পেছনে রয়েছে আরও অনেক সংগ্রামের ইতিহাস। ভাষা আন্দোলন বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এর সূচনা মূল আন্দোলন শুরু হওয়ার কয়েক দশক আগেই এবং বাঙালি মুসলমানের সেকুলার জাতিয়তাবোধ এর পেছনে কাজ করেছে।
পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠন নিশ্চিত হওয়ার পর উর্দু-বাংলা বিতর্ক আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেসময়কার গুরুত্বপূর্ণ মিল্লাত পত্রিকায় এক সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছিল, মাতৃভাষার পরিবর্তে অন্য কোনো ভাষাকে রাষ্ট্রভাষারূপে বরণ করার চাইতে বড় দাসত্ব আর কিছু থাকতে পারে না।
ধীরে ধীরে অর্থনীতি ও রাজনীতিও সেই বিতর্কের অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। ১৯৪৭ সালে দৈনিক আজাদি পত্রিকায় লেখক সাংবাদিক আবদুল হক লিখেছিলেন, উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকটি উর্দু-শিক্ষিতই চাকরির যোগ্যতা লাভ করবেন, এবং প্রত্যেকটি বাংলা ভাষীই চাকরির অনুপযুক্ত হয়ে পড়বেন। বাংলাভাষীদের আরও উদ্বেগ ছিল দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দুটি ভূখণ্ডের মানুষের সাংস্কৃতিক পার্থক্য নিয়ে।
শুধু ধর্ম তাদের মধ্যে কতটুক যোগসূত্র স্থাপন করতে পারবে সেনিয়ে ভাবনা ছিল অনেকের। ১৯৪৭ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর জিয়াউদ্দিন আহমেদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করেছিলেন। তখন ভাষা নিয়ে বিতর্ক আবারো জেগে উঠেছিল। ততদিনে মুসলিম বাঙালিদের আত্ম-অন্বেষণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের কয়েক মাসের মধ্যেই পাকিস্তানের প্রথম মুদ্রা, ডাকটিকেট, ট্রেনের টিকেট, পোস্টকার্ড ইত্যাদি থেকে বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দু ও ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। পাকিস্তান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের এই ঘোষণায় পর ঢাকায় ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কমিশনের বাঙালি কর্মকর্তারা সরকারি কাজে বাংলা ভাষার প্রয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছিলেন। পাকিস্তান গঠনের সময় পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী, পরবর্তীতে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিন ১৯৪৮ সালে আইন পরিষদের অধিবেশনে বলেছিলেন, ভাষা সম্পর্কিত বিতর্ক শুরু হওয়ার আগেই এসব ছাপা হয়ে গেছে। যদিও তার এই বক্তব্য সবাই গ্রহণ করেনি।
ভাষা আন্দোলনের সূচনা ঘটে সদ্যগঠিত পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে। সে দাবি উচ্চারিত হয় পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা উর্দুর ঘোষণায়। সে ঘোষণা জিন্নাহ-লিয়াকত থেকে মুসলিম লীগের সব শীর্ষনেতার কণ্ঠে অবাঙালি ও বাঙালির। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মুসলিম লীগ নেতাদের অধিকাংশই অখণ্ড ভারত থেকে আগত, বাকিরা তাদের অনুসারী।
অখণ্ড ভারতীয় রাজনীতিতে জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের (হিন্দু-মুসলমান দুই স্বতন্ত্র জাতি, সমপ্রদায় নয়) চাপে এবং শাসক ইংরেজ চাতুর্যে শাসন ক্ষমতা ছেড়ে আসার সময় ভারতবর্ষ বিভক্ত হয় ভারত ও পাকিস্তান নামের দুই ডোমিনিয়নে হিন্দু ও মুসলমানের স্বতন্ত্র বাসভূমি হিসেবে। বঙ্গ ও পাঞ্জাবসহ ভারতবর্ষ এই নীতিতে বিভক্ত হলেও বাস্তবতা সে দাবি মানেনি। ভারতে থেকে যায় কয়েক কোটি মুসলমান এবং পাকিস্তানে বহুসংখ্যক হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান। এ সত্য চতুর আইনজীবী জিন্নাহর অজানা ছিল না।
তবু কংগ্রেস বিরোধিতার জেদে তার অবাস্তব পাকিস্তান দাবি এবং সেই পাকিস্তানে আরেক অবাস্তব একমাত্র উর্দু রাষ্ট্রভাষা দাবি- যেখানে সব স্বদেশের জাতিগত ভাষাই উর্দু নয়- বরং বাংলা, পাঞ্জাবি, সিঞ্জি, বেলুচ, পশতু ইত্যাদি। এ জবরদস্তির বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানিরা নীরব থাকলেও পূর্বাঞ্চলে (পূর্ববঙ্গে-পূর্ব পাকিস্তানে) বাঙালিদের ভাষাসচেতন অংশ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়, মূলত ছাত্র-যুবারা এবং অংশত পেশাজীবী বুদ্ধিজীবী বাঙালি। শিক্ষকদের কেউ কেউ এ ব্যাপারে কয়েক পা এগিয়ে-যেমন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ড. আবুল কাসেম, কাজী মোতাহার হোসেন, ড. মুহম্মদ এনামুল হক প্রমুখ। আর আন্দোলনের সূচনাটি বেশ চমকপ্রদ।
পাকিস্তান জনপরিষদের প্রথম অধিবেশনে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত একটি বাস্তব দাবি তোলেন, প্রস্তাবটি রাষ্ট্রভাষার নয়, গণপরিষদে ব্যবহারিক ভাষা হিসেবে বাংলার অন্তর্ভুক্তি-যাতে গণপরিষদের বাঙালি সদস্যরা স্বচ্ছন্দভাবে নিজ মাতৃভাষা তথা বাংলায় বক্তৃতা করতে পারেন। এই সাদামাঠা দাবিটুকুই সহ্য হয়নি প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলীসহ অন্য উর্দুভাষী ও অবাঙালি সদস্যদের। এমনকি কোনো কোনো বাঙালি মুসলিম লীগ নেতার। প্রধানমন্ত্রী তীব্র ভাষায় এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন।
এমনকি প্রসঙ্গক্রমে রাষ্ট্রভাষা বাংলার বিরোধিতার বিষয়টি উল্লেখ করতে ভোলেন না। আলোচনা শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে গিয়ে দাঁড়ায়। দাঁড়ায় এর বিরোধিতায় এবং ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের বিরুদ্ধে সমালোচনায় এবং এমন আলোচনায় যে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়ার যোগ্যতা উর্দুরই রয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারির ব্যবহারিক বাংলার প্রস্তাব (১৯৪৮) এভাবে রাষ্ট্রভাষা নিয়ে বাঙালি ছাত্র-যুবাদের আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরি করে। শুরু হয় ১১ মার্চের (১৯৪৮) রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। মূলত পিকেটিং।
এর পর অনেক ঘটনা। পূর্ববঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নাজিমুদ্দিনের রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে সমঝোতা প্রস্তাব, ছাত্রবন্দিদের মুক্তি ইত্যাদি। কারণ একটাই। পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর আসন্ন ঢাকা সফর (মার্চ ১৯৪৮) সমস্যামুক্ত ও নিরুপদ্রব করা। লক্ষ্য করার মতো ঘটনা- এ ব্যাপারে তমদ্দুন মজলিস প্রভাবিত সংগ্রাম পরিষদ ও অধ্যাপক আবুল কাসেম প্রমুখের আপসবাদী ভূমিকা আন্দোলন স্থগিত করার ক্ষেত্রে।
গভর্নর জেনারেল জিন্নাহ ঢাকায় এলেন, একাধিক বক্তৃতায় জোর দিয়ে বললেন, একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। এ ব্যাপারে যারা ভিন্নকথা বলে তারা পাকিস্তানের দুশমন। জিন্নাহর অভাবিত প্রভাবে এভাবে ১৯৪৮-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে পানি ঢালা হলো। এর পর ১৯৫০-এ সরকারি মূলনীতি কমিটির রিপোর্টের বিরুদ্ধে পূর্ববঙ্গে আবার রাষ্ট্রভাষা নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল-সভা-মূলত রাজনীতিবিদদের। সেই সঙ্গে ছাত্র-যুবাদের।
এখানেও ওই একই প্রশ্ন নিয়ে প্রতিবাদ ও দাবি-পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে গ্রহণ করা। শেষ পর্যন্ত মূলনীতি কমিটির রাষ্ট্রভাষা উর্দুর সুপারিশ স্থগিত হয়ে যায়। গণতন্ত্রী প্রগতিবাদী রাজনীতি এবং সেই সঙ্গে মাতৃভাষাভিত্তিক গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ-মূলত ছাত্র-যুবসমাজ এর মুখ্য কারিগর। সেই সঙ্গে পূর্বোক্ত নানা শ্রেণির সচেতন অংশ। প্রশাসনের হঠকারী ভূমিকায় একুশে ফেব্রুয়ারি কর্মসূচি ভণ্ডুল করতে ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি। আর সেই ১৪৪ ধারা ভাঙতে বদ্ধপরিকর ছাত্র-জনতার ওপর ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পুলিশের গুলিবর্ষণ। শহীদ হন সালাম রফিক জব্বার বরকত প্রমুখ। পটভূমি পাল্টে যায়। সারা প্রদেশে জ্বলে ওঠে আগুন।
শুধু রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতেই নয়- সেই সঙ্গে স্লোগান রাজবন্দিদের মুক্তি চাই’, ‘জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা চালু করো’ এবং ‘শহীদ স্মৃতি অমর হোক। দ্বিতীয় দিন ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার উত্তাল রাজপথের মিছিলে আবার গুলি-আবারও শহীদ সফিউর, আউয়াল, কিশোর ওহিউল্লাহ প্রমুখ। শহীদ স্মৃতি অমর করতে ঢাকায় মেডিকেল হোস্টেল প্রাঙ্গণে এক রাতে (২৩ ফেব্রুয়ারি) তৈরি হয় শহীদ মিনার- তৈরি হয় দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা শহরে প্রতিবাদী ছাত্রদের হাতে।
আন্দোলন ছড়িয়ে যায় গ্রামাঞ্চলে। এক সময় বন্ধ হয় আন্দোলন। এর ধারাবাহিকতায় অর্জিত হয় শুধু অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলাই নয় (১৯৫৬ সংবিধানে), সেই সঙ্গে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক ও গণতন্ত্রী প্রগতিবাদী জাতীয় চেতনার বিকাশ- প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবির। একুশে ফেব্রুয়ারি চিহ্নিত হয় ও পালিত হতে থাকে ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে- শোক দিবস ও প্রতিবাদী সংগ্রামের প্রেরণা দিবস হিসেবে। আর শহীদ মিনার হয়ে ওঠে তার প্রতীক- যেখান থেকে শহীদ দিবস পালনই নয়, সব রকম গণতান্ত্রিক দাবি-দাওয়ার প্রতিবাদী আন্দোলনের সূচনা ও উৎস শহীদ মিনার, শহীদ দিবস।
সমগ্র জাতির ভাষিক আবেগ, রাজনৈতিক তৎপরতা ও আবেগ কল্লোলিত হয়ে ওঠে শহীদ দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি এবং শহীদ মিনারকে কেন্দ্র করে- নানা উপলক্ষে, নানা রাজনীতি ঘিরে। রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে এই দুই প্রতীক রাজনৈতিক সংগ্রামের উৎস হয়ে দাঁড়ায়। আর এ বিস্ময়কর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এর মর্যাদার স্বীকৃতিতে ইউনেস্কো দিনটিকে ঘোষণা করে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে যা বিশ্বের সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এ ঘটনা গর্ব ও অহংকারের বিষয় হয়ে থাকে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য। এখানেই গুরুত্ব ও তাৎপর্য একুশে ফেব্রুয়ারির। একুশে ফেব্রুয়ারি পূর্ববাংলায় যে অসম্ভবকে সম্ভব করেছে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এখনো যেসব জনপদে মাতৃভাষার দাবিতে সংখ্যাহীন তরুণ-তরুণী সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছেন, বিশেষ করে বিশ্বায়নের এই কালে।
একুশে ফেব্রুয়ারির শুধু বাংলাভাষীদের অহংকার হয়ে না থেকে প্রতিবাদী একুশ কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা না নোয়ানোর প্রত্যয়রূপে জাগ্রত থাকতে পারবে কী? একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস কিন্তু সাধারণ ছাত্র-জনতার এবং শেখ মুজিবুর রহমানের ইতিহাস। এই ইতিহাসের নায়ক অথবা মহানায়ক তারাই। দেশের চিন্তাবিদ-বুদ্ধিজীবীরা তাদের যুক্তিবাদী সৃজনশীল লেখনীর দ্বারা সমাজজীবনে এর ক্ষেত্র রচনা করেন। দেশের স্বাধীনচেতা মৃত্যুঞ্জয়ী তরুণরা সেই উর্বর ক্ষেত্রে রক্তবীজ বপন করেন। ফলে এই সোনালি ফসল। এই তরুণদের সংগ্রামী চেতনা সমগ্র সমাজে ছড়িয়ে পড়ে গড়ে তোলে এক অজেয় শক্তি।
তাই পরবর্তী সময়ে রাজনীতিকে দান করে নতুন দ্যোতনা। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয় এক নতুন চিৎশক্তি। সৃষ্টি হয় নতুন ইতিহাস। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি ওই সব শহীদ এবং বীর যোদ্ধাদের যাদের রক্ত, অশ্রু ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা একুশে ফেব্রুয়ারির মতো এই স্মরণীয় দিবসটি লাভ করেছি। এ দিনের সৃষ্টিতে তরুণরা রক্তাক্ত অবদান রাখলেও এখন তা বিশ্বজনীন হয়ে উঠেছে। তাই তো বলি, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।
রায়হান আহমেদ তপাদার
লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।