ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি।ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা মুসলমানদের প্রধান উৎসব ও আনন্দের দিন। একটা সময় সেই আনন্দকে আরো বাড়িয়ে দেয়া এবং সৌহাদ্যের বন্ধনকে অটুট রাখার অন্যতম মাধ্যম ছিল ঈদ কার্ড।
“ঈদ কার্ড”বাঙ্গালি সংস্কৃতির একটি অন্যতম অংশ ।দশ-বারো বছর আগেও ঈদ আসলে শহর এবং গ্রামের অলি-গলিতে ঈদ কার্ডের দোকান নিয়ে বসতে দেখা যেতো এলাকার কিশোরদের ।বাহারি ডিজাইনের সেই সব কার্ডের ভিতরে লেখা থাকতো ঈদের বিভিন্ন শুভেচ্ছা বার্তা ,শুভ কামনামূলক উক্তি,ছড়া- কবিতা,ছবি ঈত্যাদি ।এছাড়াও প্রাপক এবং প্রেরকের নাম লেখারও প্রচলন ছিল। সেসময় বিভিন্ন লাইব্রেরী ও ষ্টেশনারী দোকানেও বিক্রি হতো ঈদ কার্ড।বন্ধু-বান্ধব এবং প্রিয়জনকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হতো এই ঈদ কার্ডের মাধ্যমে। দেশের এবং দেশের বাইরে,বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু- বান্ধবকে ঈদ কার্ড পাঠনোর প্রচলনও ছিল সেই সময়ে।
শৈশবের ঈদ আনন্দ অনেকটাই জড়িত ছিল ঈদ কার্ডের সাথে।প্রযুক্তির বিবর্তনে ঈদ কার্ড আজ প্রায় বিলীন। ঈদ কার্ডের সাথে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশবের ঈদ আনন্দও।ঈদের শুভেচ্ছা এখন সোশ্যাল মিডিয়ার একটা মেসেজের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। কার্ডের ভিতরে নিজ হাতে দুই লাইন লেখার চেয়ে মোবাইলের কী-প্যাডে লিখতেই এখন সবাই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।কিন্তু ঈদ কার্ডে পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তার মধ্যে আপনজনের যে ইমোশন মেশানো থাকতো তা সোশ্যাল মিডিয়ার ঐ মেসেজের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না।বর্তমানে একই মেসেজ টাইপ করে সবাইকে শুভচ্ছা জানানো হয়,এতে বিরক্তবোধ করেন অনেকেই।ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের এই ঈদ শুভেচ্ছা বার্তায় কোনো আনন্দ খুঁজে পায় না তরুণরা।
প্রযুক্তির উন্নয়নে ঈদ কার্ড এখন স্মৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে রয়ে গেছে।ঈদ কার্ড আবারও ফিরে আসুক আমাদের মাঝে সেই সাথে ফিরে আসুক শৈশবের ঈদ আনন্দ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।