তৈয়বুর রহমান কিশোর,বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দুনীতির দায়ে মিজানুর রহমান মোল্লা ওরফে সোনা মিয়া নামে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। গত ১৫ জুনের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বুধবার (২১ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইন।
জানা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত ফরিদপুরের জেলা কার্যালয় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-০২। মামলার পর গত ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে চার্জসিট (নম্বর-০১) দাখিল করে দুদক। বিষয়টি আদালত আমলে নিয়ে বিচারকার্য শুরু করায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী মন্ত্রীপরিষদ বিভাগকে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন। মামলাটির অভিযোগপত্র বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক গৃহীত হওয়ায় তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করেন। ওই প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোল্যার সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী চেয়ারম্যানকে স্বীয় পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওই এলাকার একটি হত্যা মামলাও চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ১৫ জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোল্লা ওরফে সোনা মিয়া বলেন, আমি বরখাস্তের কোন কাগজপত্র এখনো হাতে পাইনি। বিষয়টি লোক মুখে শুনে জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি মামলা আমার নামে চলমান রয়েছে। কিন্তু ওই মামলার রায় এখনো হয়নি। বরখাস্তের চিঠি পাওয়ার পর যদি আমার কোন আইনী প্রক্রিয়ার সুযোগ থাকে, তাহলে আমি সেটা করবো।
এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা ফরিদপুরের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, মিজানুর রহমান মোল্যার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে অসৎ উপায়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে তৎকালীন উপপরিচালক মামলা করেন। সেই মামলায় তদন্ত শেষে ২০২২ সালে বিজ্ঞ আদালতে একটি চার্জসিট পাঠানো হয়। স্থানীয় সরকার নীতিমালা বিধিমালা অনুযায়ী আদালত চার্জসিট আমলে নিয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন মন্ত্রণালয়।
বুধবার বিকেল ৩টায় রূপাপাত ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বহিস্কারের আদেশের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসাইন বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠির কপি আমিও হাতে পেয়েছি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।