ইতিহাসের সাক্ষী: পোলিওর টিকা নিয়ে আমেরিকায় যেভাবে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল কয়েকশ শিশু
BBC Bangla
মহামারির টিকা আবিষ্কার ছিল একটা যুগান্তকারী ঘটনা। উদ্ভাবক জোনাস স্যল্ক এই টিকার সফল পরীক্ষা চালান।
পোলিও মহামারি ঠেকাতে পঞ্চাশের দশকে একটি কোম্পানির তৈরি ভুল প্রতিষেধক টিকা নিয়ে সারা জীবনের মত পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল আমেরিকার কয়েকশ শিশু।
ভ্যাকসিন তৈরিতে কীভাবে ঘটেছিল মারাত্মক ওই ভুল?
আমেরিকায় ১৯৫০এর দশকে শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সংক্রামক একটি রোগ হিসাবে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল পোলিও। সংক্রমিত হয়েছিল হাজার হাজার শিশু। পঙ্গুত্ব এবং শিশুমৃত্যু এই রোগকে একটা বিভীষকায় পরিণত করেছিল।
এর প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার মানুষের মনে স্বস্তি আনলেও ১৯৫৫ সালে আমেরিকায় টিকাদান নিয়ে এক বিশাল কেলেঙ্কারির কারণে বড় রকম হোঁচট খেয়েছিল এই টিকা উদ্ভাবনের সাফল্য।
আমেরিকার একটি ওষুধ কোম্পানির পোলিও প্রতিষেধক টিকা তৈরিতে একটা ভুলের কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল কয়েকশ শিশু। পরে ওই কেলেঙ্কারি পরিচিতি পেয়েছিল ‘কাটার দুর্ঘটনা’ নামে। ওই টিকা তৈরির কোম্পানির নাম ছিল কাটার ল্যাবরেটরিস।
সেটা ছিল ১৯৫৫ সালের এপ্রিল মাস। অ্যান গডস্ট্যাংকার বয়স ছিল পাঁচ বছর। গডস্ট্যাংকা পরিবার কয়েকদিনের মধ্যেই ছুটি কাটাতে যাবে ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে। অ্যানের বাবা মা সিদ্ধান্ত নিলেন ছুটিতে যাবার আগে দুই বাচ্চাকে সবে বাজারে আসা পোলিওর নতুন প্রতিষেধক টিকা দিয়ে দেবেন।
সুস্থ, স্বাভাবিক অ্যান ছুটিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ল।
অ্যানের মাথার যন্ত্রণা শুরু হল, সাথে সবসময় বমি বমি ভাব। ছুটি বাতিল করে শিশু অ্যান ও তার ভাইকে নিয়ে তার বাবা মা যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরে গেলেন।
কিন্তু অ্যান ক্রমশ আরও অসুস্থ হয়ে পড়তে লাগল। তার পা শক্ত হয়ে যেত লাগল।
অ্যান গডস্ট্যাংকা বিবিসিকে বলছিলেন বিছানা থেকে তার ওঠা বারণ হয়ে গেল।
“আমার মনে আছে বাবা মা সবসময় ঘরের পর্দা বন্ধ করে রাখতেন। ঘরটা খুব অন্ধকার হয়ে থাকতো। বাবা মার হুকুম হল বিছানায় সবসময় শুয়ে থাকতে হবে। শুয়ে থাকতে থাকতে আমি অস্থির হয়ে উঠতাম।”
“বাবা মা চোখের আড়াল হলে মাঝে মাঝে উঠে আমার শোবার ঘরে চুপি চুপি একটু হাঁটতাম, যাতে বাবা মা টের না পায়। তখন কোন সমস্যা হয়নি,” অ্যান বলছিলেন।
কিন্তু সেটাই শেষবারের মত সাহায্য ছাড়া নিজে হেঁটেছিলেন অ্যান।
তাকে যে টিকা দেয়া হয়েছিল, তাতে সমস্যা ছিল। ওই ভ্যাকসিন ডোজের মধ্যে ছিল পোলিওর জীবিত ভাইরাস। যে ভাইরাস থেকে বাঁচানোর জন্য বাবা মা তাকে টিকা দিয়েছিলেন, সেই ভাইরাসই তাকে আক্রমণ করেছিল। পোলিও রোগে সংক্রমিত হয়েছিলেন অ্যান।
“আমার মনে পড়ে এরপর আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। আইসোলেশন রুমে সবার থেকে আলাদা করে রাখা হলো। আমি হাত, পা, হাত-পায়ের আঙুল, গোড়ালি কিছুই নাড়াতে পারতাম না। সব অবশ হয়ে গিয়েছিল। তবে ভাগ্য ভাল – ভাইরাস আমার ফুসফুস আক্রমণ করেনি। আমি অন্তত নিজে নি:শ্বাস নিতে পারছিলাম।”
পুরো গ্রীষ্মকালটা অ্যানকে হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে কাটাতে হল। অ্যান না পারত উঠতে, না পারত হাঁটতে।
রয়াল সোসাইটি অফ মেডিসিন সাময়িকীর তথ্য অনুযায়ী ১৯৫৫ সালের এপ্রিল মাসে ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই লাখের বেশি শিশুকে ত্রুটিপূর্ণ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছিল ।
কয়েকদিনের মধ্যে টিকার প্রতিক্রিয়ায় শিশুদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অবশ হয়ে যাবার খবর আসতে থাকে এবং পোলিওর গণ টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত রাখতে হয়। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে কাটার ল্যাবরেটরিসের তৈরি একটি ব্যাচের টিকায় ভাইরাস জীবিত অবস্থায় থেকে গিয়েছিল।
তাদের টিকা নিয়ে ৪০ হাজার শিশুর পোলিও সংক্রমণ হয়, ২০০ শিশু কমবেশি পঙ্গু হয়ে যায় এবং মারা যায় ১০ জন।
কাটার কেলেঙ্কারির শিকার হয়েছিল যেসব শিশু অ্যান তাদের একজন।
এই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগেই আমেরিকান জীবাণু বিজ্ঞানী ও গবেষক জোনাস স্যল্ক ঘোষণা করেন বিশাল সংখ্যক সাধারণ মানুষের ওপর তার উদ্ভাবিত পোলিওর টিকার পরীক্ষা সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে।
খবরে বলা হয় খুব দ্রুত শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের পোলিওর প্রতিষেধক টিকা দেয়া সম্ভব হবে।
এই টিকা উদ্ভাবনের খবরে উল্লসিত হয়ে উঠেছিল বিশ্বের মানুষ। মারাত্মক এই ভাইরাসের সংক্রমণে পঙ্গুত্বের শিকার হচ্ছিল মানুষ, সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছিল শিশুরা।
বিশ্ব যুদ্ধের পর ১৯৫২ সালে আমেরিকায় পোলিও মহামারিতে হাজার হাজার মানুষ পোলিওতে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। তাই সফল টিকার সম্ভাবনা রোগের বিভীষিকা ও আতঙ্কে থাকা মানুষের মনে আশার আলো নিয়ে এল।
ঘোষণাগারে পোলিওর জীবাণু তৈরি করে সেটি নিষ্ক্রিয় করার পর টিকার মাধ্যমে তা প্রতিষেধক হিসাবে দেবার জন্য বিভিন্ন গবেষণাগারে টিকা তৈরি শুরু হল
জোনাস স্যল্কের উদ্ভাবিত সেই টিকা তৈরির প্রক্রিয়া বেশ জটিল ছিল বলে বিবিসিকে ব্যাখ্যা করেছেন কার্টার দুর্ঘটনার গবেষক অধ্যাপক পল অফিট, যিনি একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং টিকার ব্যাপারে বড় প্রবক্তা।
“বিজ্ঞানী স্যল্ক পোলিওর জীবাণু নিয়ে সেটাকে প্রথমে জীবন্ত কোষের মধ্যে বড় করেন – বানরের কিডনির কোষের মধ্যে। এরপর সেই জীবাণু পূর্ণতা পাবার পর কোষ ও কোষের অন্যান্য বর্জ্য থেকে তিনি সেটিকে আলাদা করে ফেলেন, যাতে শুধু ভাইরাস ছাড়া সেখানে আর কিছু না থাকে।
“এরপর ফর্মাল্ডিহাইড নামে এক রাসায়নিক ব্যবহার করে জীবাণুকে তিনি নিষ্ক্রিয় করে দেন। তিনি দেখেন ওই নিষ্ক্রিয় ভাইরাস শিশুদের শরীরে ইনজেক্ট করলে তাদের শরীরে ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করার প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে।”
অধ্যাপক অফিট বলছেন টিকার ট্রায়ালের সময় শিশুদের মধ্যে রোগের কোন সংক্রমণ ঘটেনি, কারণ বিজ্ঞানী রাসায়নিক ব্যবহার করে ভাইরাসকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে ফেলেছিলেন।
কিন্তু যখন ব্যাপক পরিসরে ভ্যাকিসন তৈরির কাজ শুরু হয়, তখন জোনাস স্যল্ক টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর কাছে যে নির্দেশাবলী পাঠান, তাতে যথেষ্ট তথ্য ছিল না বলে বলছেন পল অফিট।
কাটার কোম্পানি ভ্যাকসিনের মধ্যেকার ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য যে ধরনের ফিল্টার ব্যবহার করেছিল, পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে সেই ফিল্টার ভাইরাসকে সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করতে পারেনি।
ভাইরাসকে যে কোষের মধ্যে জন্ম দিয়ে বড় করা হয়েছে সেই কোষের বর্জ্য সেখানে থেকে গিয়েছিল, যার মধ্যে থেকে গিয়েছিল জীবন্ত ভাইরাসের অংশবিশেষ।
“কোষের একটা কণাও যদি জীবাণুর সাথে মিশে থাকে, তাহলে ফর্মাল্ডিহাইড দিয়ে, ভাইরাসকে পুরোপুরি মেরে ফেলা সম্ভব নয়। কারণ ভাইরাস ওই এক কণা কোষ থেকেও বেঁচে থাকার রসদ সংগ্রহ করতে পারবে,” বলছেন অধ্যাপক অফিট।
অর্থাৎ জীবাণুকে পুরো কোষ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে না পারলে ওই জীবাণু সক্রিয় থেকে যায় আর সেটাই ঘটেছিল কাটারের তৈরি টিকার ক্ষেত্রে।
অধ্যাপক অফিট বলছেন ফিল্টার প্রক্রিয়া যে একেবারে অকেজো তা নয়।
“কোন কোন কোম্পানি একই ধরনের ফিল্টার পদ্ধতি ব্যবহার করেছিল, তারা সফলও হয়েছিল। কারণ তাদের ফিল্টারগুলোতে ছিদ্র ছিল অতি সূক্ষ্ম এবং সেগুলো ছিল খুবই শক্তিশালী। তারা কিন্তু কোষের বর্জ্য থেকে ভাইরাসকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করতে পেরেছিল এবং জীবাণুকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে ফেলেছিল।”
কাটার কোম্পানির পোলিও ভ্যাকসিনের ত্রুটিপূর্ণ ব্যাচটি ডাক্তাররা খুব দ্রুত চিহ্ণিত করতে সক্ষম হন। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ টিকাগুলো বাজার থেকে জব্দ করা হয়।
অ্যানের বাবা মা কাটার কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। আদালতে হাজির হয়ে অ্যানকে দেখাতে হয়েছিল তার পা কতটা মারাত্মকভাবে পঙ্গু হয়ে গেছে। জুরিদের সামনে হেঁটে দেখাতে হয়েছিল ক্ষতির মাত্রা।
“পোলিও হবার পর ক্রাচ ছাড়া আমি দাঁড়াতে পারতাম না। আদালতে আমার প্রতিবন্ধকতার প্রমাণ দেয়াটা ছিল প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণার। আমি দাঁড়াতে পারছি না, আমার কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু আমাকে বারবার হেঁটে প্রমাণ দিতে হচ্ছে আমার কতটা কষ্ট হচ্ছে,” বলছিলেন অ্যান।
কাটার কোম্পানিকে অবহেলার অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছিল। কারণ জুরিরা শুনেছিল জোনাস স্যল্কের উদ্ভাবিত টিকা পদ্ধতি অনুসরণ করে টিকা তৈরি করতে অন্য কোম্পানিগুলোকে কীভাবে হিমশিম খেতে হয়েছে।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারি স্তরে নিরাপত্তার বিষয়টিতে সেসময় বড়ধরনের গলদ ছিল। ওই ত্রুটির জন্য ফিল্টার করার পদ্ধতি যে দায়ী সেসময় তারা সেটা না জানলেও, কার্টার কোম্পানির বিজ্ঞানীরা কিন্তু জানতেন তারা যে ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন তার মধ্যে এক তৃতীয়াংশ ছিল ত্রুটিপূর্ণ, কিন্তু আমেরিকায় ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রকদের সেটা জানানো তাদের জন্য আব্যশক ছিল না।
আমেরিকায় ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি তখন খুবই নতুন। মাত্র আড়াই ঘন্টার মধ্যে টিকা তৈরির লাইসেন্স বের করা যেত।
এখন সেই লাইসেন্স নিতে লাগে অন্তত এক বছর। এখন যে টিকা তৈরি করা হচ্ছে, কী প্রক্রিয়ায় সেটা তৈরি করা হচ্ছে, কোন ল্যাবে তৈরি করা হচ্ছে সবকিছুর জন্য আলাদা আলাদাভাবে ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ থেকে লাইসেন্স নিতে হয়।
ওষুধ ও টিকা কতটা নিরাপদ তার মান যাচাই প্রক্রিয়াও ৫০এর দশকে খুবই দুর্বল ছিল। একটা কোম্পানির তৈরি প্রত্যেকটা ব্যাচের টিকা বা ওষুধ মানসম্পন্ন ও নিরাপদ কিনা তাও যাচাই করে দেখা হতো না। যে আইন এখন হয়েছে।
ছবির উৎস, GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
পোলিও রোগের আতঙ্ক তখন এতটাই ছিল যে
আমেরিকায় প্রায় প্রত্যেক বাবা মা তাদের সন্তানদের টিকা দেওয়ানোর জন্য টিকাদান কেন্দ্রে ভিড় জমাতেন।
কাজেই কাটার কোম্পানিকে টিকা বাজারে ছাড়ার আগে প্রমাণ দিতে হয় নি যে তাদের প্রত্যেকটা ব্যাচের টিকা সমান নিরাপদ কিনা।
তবে অনিরাপদ টিকা বিক্রির জন্য জুরি কাটার ল্যাবকে দায়ী করেছিল। এবং অ্যান গডস্ট্যাংকাকে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দেবার নির্দেশ দিয়েছিল।
কিন্তু অ্যান বলছেন সেই ক্ষতিপূরণ মোটেই যথেষ্ট ছিল না।
“আমার বাবা মাকে আমার জন্য বাসায় অনেক কিছু বদলাতে হয়েছিল। আমার চলা ফেরার জন্য সব জায়গায় র্যাম্প বসাতে হয়েছিল। আমাকে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল ১৫ বার। আমার ঘাড় আর মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে।”
“এর জেরে আমার নারকোলেপ্সি রোগ হয়, যে রোগের কারণে আমার সবসময় ঘুম পায়। আমি শত চেষ্টা করেও জেগে থাকতে পারি না। প্যারালিসিসে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেই আমি এই রোগের শিকার,” বলেন অ্যান গডস্ট্যাংকা।
তবে এতসব শারীরিক সমস্যা সত্ত্বেও অ্যান ডক্টরেট করেছেন এবং ৩০ বছর কমিউনিটি কলেজে পড়িয়েছেন।
পোলিও আক্রান্ত হয়ে তার জীবন হুইল চেয়ার নির্ভর হয়ে গেলেও আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শক্তির জোরে জীবনকে যতটা সম্ভব এগিয়ে নিয়ে গেছেন অ্যান গডস্ট্যাংকা।
“আমি চাইনি পোলিও আমার জীবনে চলার পথ ঠিক করে দিক। হুইল চেয়ার নির্ভর জীবন আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। হুইল চেয়ারে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিও ছিল অন্যরকম। কিন্তু আমি পরাজয় মেনে নিতে চাইনি। আমি প্রমাণ করতে চেয়েছি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও আমার মস্তিষ্কটা সচল আছে।”
কার্টার কোম্পানির এই কেলেঙ্কারির পর আমেরিকায় ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছিল।
নিরাপদ মান নিশ্চিত করে এরপর দশকের পর দশক ধরে তৈরি হয়েছে জোনাস স্যল্কের উদ্ভাবিত পোলিওর টিকা। মারাত্মক এই রোগ পৃথিবী থেকে প্রায় নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে।
কিন্তু এখন বিশ্বে চলছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস রুখতে টিকা তৈরির ব্যাপক উদ্যোগ।
অধ্যাপক পল অফিট বলছেন ১৯৫৫ সালের ওই অভিজ্ঞতা থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষণীয় বিষয় হল- ল্যাবরেটরিতে একটা ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করা আর তার পর গণহারে তা উৎপাদন করা -দুটো একেবারে ভিন্ন বিষয়।
গবেষণাগারে অল্প লোকের ওপর পরীক্ষার জন্য ভ্যাকসিন তৈরিতে সফল হবার পর যখন সেই ভ্যাকসিন বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য তৈরি করা হচ্ছে, তখন তা একইভাবে নিরাপদ হবে কিনা, সেটা নিশ্চিত করা এসব টিকা তৈরি প্রতিষ্ঠানের অবশ্য কর্তব্য এবং এর জন্য রাষ্ট্রীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে কঠোর পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকা একান্ত জরুরি।
বিবিসির সাইমন ওয়াটস কথা বলেছেন অ্যান গডস্ট্যাংকা এবং অধ্যাপক পল অফিটের সাথে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।