রংপুরের পীরগাছায় ছয় মাস সংসার করার পরেও স্ত্রীর স্বীকৃতি মিলছে না এক কলেজছাত্রীর। এ ঘটনায় স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে গত ১১ দিন থেকে ছেলের বাড়িতে অনশন করছে ওই কলেজছাত্রী। আজ মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের সোনারায় কারবালা গ্রামের হরিশ চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
 
খোঁজ নিয়ে জানা য়ায়, হরিশ চন্দ্র বর্মেণের ছেলে পংকজ কুমার বর্মণের সঙ্গে একই গ্রামের মামতো বোন ওই কলেজছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ছয় মাস আগে ওই শিক্ষার্থীকে শাঁখা-সিঁদুর পরিয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দেন পঙ্কজ। পরে শহরের আলমনগর খামারপাড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করে তারা।
 
পড়ালেখার সুবাদে তারা আগে থেকে রংপুরে থাকায় বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারেনি। সম্প্রতি বিষয়টি ফাঁস হলে সমাধানের জন্য তাদেরকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে ছেলের পরিবার। পরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ছেলেকে গোপন স্থানে রেখে মেয়েটিকে বেধড়ক মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ছেলে বাড়িতে রেখে আসেন।
 
ভূক্তভোগী কলেজছাত্রী জানান, পংকজ কুমার সম্পর্কে তার ফুফাতো ভাই। দীর্ঘ এক বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ছয় মাস আগে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করে একই সঙ্গে রংপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে ঘর সংসার করে আসছিল। সম্প্রতি সময়ে ছেলে ও তার পরিবারের লোকজন তাদের বাড়িতে উঠিয়ে নেওয়ার জন্য নিয়ে আসে। কিন্তু তাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
 
স্থানীয়রা জানান, পংকজ কুমারের মা ওই ছাত্রীকে ছেলের স্ত্রী হিসেবে মেনে না নেওয়ায় গত ১১দিন থেকে সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ওই ছাত্রী ছেলের বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবীতে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
 
পীরগাছা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি তরুন কুমার রায় বলেন, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে সম্পন্ন করেছে তারা। শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে। যেহেতু ছেলে মেয়ে উভয়ে সাবালক তাই বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত।
 
তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর বলেন, ছেলে পক্ষ রাজী না থাকায় সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তবু্র বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়েছে।
 
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল ইসলাম জানান, স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে সমাধান না হলে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।