এসএম তাজাম্মুল,মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ যশোরের মনিরামপুরে শ্বশুরবাড়ি এলাকা থেকে আক্তারুল ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ উপজেলার দীঘিরপাড় মাঠের পাকা রাস্তার পাশের একটি খেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পাশে পড়ে ছিল।
আক্তারুল ঝিকরগাছা উপজেলার খোশালনগর বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের চাঁদ আলী গোলদারের ছেলে।
স্বজনদের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল আক্তারুলের। এর জেরেই তিনি খুন হয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, রাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যশোর থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আক্তারুলের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মুখে ও মাথায় একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে।
আক্তারুলের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে মনিরামপুরের ঝাঁপা এলাকায় বিয়ে করেন তিনি। তাঁর একটি ছেলে রয়েছে। সম্প্রতি শ্বশুরপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুকের মামলা করে। আদালত মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরকে।
গতকাল বুধবার বড় ভাই নজরুল ইসলাম ও ভগ্নিপতি আব্দুল আজিজকে নিয়ে পিবিআই দপ্তরে যান আক্তারুল। সেখান থেকে বের হওয়ার পর আক্তারুল একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে ভাই ও ভগ্নিপতি আক্তারুলকে খুঁজে পাননি।
আক্তারুলের ভাই নজরুল বলেন, ‘আক্তারুলকে বাড়ি না পেয়ে আমরা তাঁর ব্যবহৃত ফোনে কল করতে থাকি। রিং হলেও রিসিভ না হওয়ায় আমরা তাঁর খোঁজ শুরু করি। না পেয়ে রাতেই বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানাই।’
নিহতের চাচাতো ভাই ফারুক হোসেন বলেন, ‘থানায় আক্তারুলের ফোন নম্বর দিলে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ খোঁজাখুঁজি শুরু করে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ জানায়, আক্তারুলের ব্যবহৃত ফোনটি দীঘিরপাড় গ্রামের মোবাইল টাওয়ারের দক্ষিণ পাশে খোলা মাঠে রয়েছে। তখন পুলিশ আমাদের সঙ্গে নিয়ে আক্তারুলের খোঁজে বের হয়। ভোরের দিকে রাস্তার পাশে মৃত অবস্থায় আক্তারুলকে পাওয়া যায়।’
ফারুক হোসেন আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা, যশোর থেকে ফেরার সময় ওই স্থানে পৌঁছালে গতিরোধ করে শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করে আক্তারুলকে হত্যা করা হয়েছে।’
তবে আক্তারুলের শ্বশুর রুহুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা গন্ডগোল নিয়ে আমরা আদালতে মামলা দিছি। এর বেশি কিছু না। আক্তারুলের মরার ব্যাপারে আমরা কিছু জানিনে।’
এদিকে আজ সকালে মনিরামপুর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আশেক সুজা মামুন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামানসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ বিষয়ে জানতে মনিরামপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামানকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে সহকারী পুলিশ সুপার আশেক সুজা মামুন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।