“রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ” এরকম স্লোগানে সেবার ব্রত নিয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার এখন জায়েলিয়া যুগের মত রুপ নিয়েছে।সব ধরনের অনিয়মকে সাধারণ নিয়মে পরিনত করেছেন বর্তমানে দায়িত্বরত জেল সুপারিন্টেনডেন্ট ও জেলার।যোগদান করার পর থেকেই এই দুই কর্মকর্তা জড়িয়েছেন নানা অনিয়ম আর দুর্নীতিতে।

ইতোমধ্যে বন্দিদের খাবার চুরি করে তা বাজারজাত কালে জনতা ও পুলিশের হাতে আটক, বন্দিদের নিম্নমানের খাবার পরিবেশন ও মাদকদ্রব্যে ছয়লাব রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার, টাকা ভর্তি হাত বাড়ালে কারাগারে নারী বাদে সব মেলে, জেলখানার ক্যান্টিনে দ্বিগুন দামে নিম্ন মানের খাবার, বন্দি বানিজ্য এখন রমরমা, ভিতরে খাবার, ওষুধসহ অন্যান্য কিছু পাঠাতে হলে দিতে হয় ঘুষ, ঘুষ দিলেই পাওয়া যায় হাসপাতালের আরামের বিছানা, বন্দীদের সাথে দেখা করতে বা ফোনে কথা বলতে দিতে হয় ঘুষ সহ বিভিন্ন শিরোনামে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে এসব বিষয়ে।

সম্প্রতি জেল থেকে বেরিয়ে আসা কয়েকজন কয়েদির সূত্রে নতুনকরে জানা গেল, জেল মেডিকেলে রাইটার হিসেবে কাজ করছেন চন্দন কুমার নামের এক ধর্ষণ মামলার আসামী। তিনি এই কাজের পাশাপশি ঘুমের ওষুধ, গাঁজা, ফেন্সিডিল ও নেশাজাতীয় ওষুধ বিক্রির ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছেন দেদারসে। তার আরেক সহযোগী গোদাগাড়ীর হেরোইন মামলার আসামী মাদক সম্রাট ফাইসাল। তিনি নগদ টাকা খাটিয়ে সামনে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি আর আড়ালে মাদক বিক্রির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব ব্যবসার ভাগ পাচ্ছেন কারারক্ষী থেকে শুরু করে জেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট পর্যন্ত, কাজেই এখানে তাদের রাখা হয়েছে “নিরাপদ” !

সূত্র বলছে, গত দেড় মাস আগে মহিলা ওয়ার্ডের ফাঁসির আসামীর কাছ থেকে একটি মেবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়, বিষয় টি জানাজানি না করে ধামাচাপা দেন কারারক্ষীরা, এখানেও হয় মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন। এর আগে আনিসুর নামে এক কারারক্ষী, কয়েদীর স্ত্রী জাফরিন তামান্না নামের এক নারী’কে whatsapp এর ম্যাধমে কু-প্রস্তাব দিলে, ঐ নারী কর্তৃপক্ষকে জানান, কিন্ত এ বিষয়ের কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি কারা কর্তৃপক্ষ। কেস টেবিল রাইটার তপন টাকার বিনিময়ে বন্দীদের থাকার সুব্যবস্থা করেন, মাদক বাণিজ্য সহ নানা অপকর্মের সাথেও জড়িত তিনি।জেল খানার জি মেইল এর তথ্য চুরির অভিযোগ ওঠে ডিআইজি প্রিজন অফিসের কারারক্ষী সুলতানের বিরুদ্ধে, জামাতের মিটিং করানোর অভিযোগ ওঠে কারারক্ষী নায়েক নাজমুলের বিরুদ্ধে ! এছাড়াও কয়েদিদের মধ্যে কেস টেবিল রাইটার তপন, সুবেদার নূর মোহাম্মদ, যাবতজীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামী সিআইডি দুলাল সহ বেশ কয়েকজন এই অন্ধকার জগতের অপরাধ পরিচালনা করে থাকেন, আর এই অপরাধীদের যে কোন সমস্যায় তাদের “আলোর পথ” দেখান জেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও জেলার সাহেব।

জেলার নিজাম উদ্দিন’কে বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি ফাঁসির আসামীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার, কারারক্ষী কর্তৃক কয়েদীর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়া এবং নায়েক নাজমুলের সহযোগিতায় জামাতের মিটিং সম্পর্কে জানা নেই বলে জানান। তবে কারারক্ষী সুলতানের জিমেইল থেকে তথ্য চুরির বিষয়ে বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে বলে জানান।

এসব বিষয়ে কথা বলতে সিনিয়র জেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুল জলিল’কে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।