দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। বাড়ছে মৃত্যুর খতিয়ান। উদ্বিগ্ন সরকার। সাধারণ মানুষ আতংকে। উদ্বেগ বাড়ছে সচেতন মহলেও। ইতিমধ্যে কঠোর অবস্থানে নেমেছে প্রশাসন। সরকার বাধ্য হয়েছে আবারও সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা দিতে আবারো সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৯ শে মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা তবুও করোনার এই ভয়াবহতার মাঝেও অভয়নগরে থেমে নেই কোচিং বাণিজ্য। বিশেষ ক্লাসের নামে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও চলছে এ বানিজ্য।
এছাড়াও নওয়াপাড়ায় বেশ কিছু প্রাইভেট স্কুলও সরকারের নিয়ম কানুনকে থোড়ায় কেয়ার করে রীতিমত ক্লাস ও কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশাসনেও তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শ্রেণি কক্ষে কোচিং করানোর অপরাধে পল্লী অঞ্চলের দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
তবে নওয়াপাড়ায় শহরাঞ্চলে প্রশাসনের নাকের ডগায় দেদারছে চললেও কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় সচেতন মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুর রহমান, সুন্দলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও ফুলেরগাতি হরিশপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানো ও কোচিং করানোর চিত্র দেখেন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে এর প্রমাণ পান।
এলাকাবাসি ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, সুন্দলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে দীলিপ কুমার দাস ও ফুলেরগাতি হরিশপুর নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চিরঞ্জিত পাড়ে নামে দুই শিক্ষক প্রাইভেট ও কোচিং করাচ্ছিলেন। করোনাকালীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস, প্রাইভেট, ও কোচিং সেন্টার সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বন্ধ থাকা সত্বেও কেন ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট ও কোচিং করানো হচ্ছে এজন্য আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট কারণ দর্শানোর জবাব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। এব্যাপারে সুন্দলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম ধর বলেন, আমি অসুস্থ যেকারণে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছি। কোন শিক্ষক প্রাইভেট বা কোচিং করাচ্ছিল তা আমার জানা নেই
। এব্যাপারে ফুলেরগাতি হারিশপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিংকর কুমার ধর বলেন, বিদ্যালয়ে কোচিং করানো হচ্ছিলো না। কিছু শিক্ষার্থী এ্যাসাইনমেন্ট বোঝে তাই তারা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অভয়নগর উপজেলার সরকারি স্কুল-কলেজের ও এমপিওভূক্ত স্কুলের শিক্ষকরা সুকৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কোচিং ব্যবসা।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১ ঘন্টা করে মাসে ১২ দিন থেকে ১৫ দিন তাদের পড়ানো হয়। কোচিং ফি বাবদ ৫’শত থেকে ১৫’শত টাকা করে দিতে হয় তাদের। প্রশাসন এসব চিত্র দেখেও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহন না করায় অভিভাবকমহল হতাশ। একটি সূত্র জানায়, নওয়াপাড়া পৌরসভায় রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক কোচিং সেন্টার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এসব অবৈধ কোচিং বাণিজ্য। কেবল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, মোড়ে মোড়েও চলছে কোচিং বানিজ্য।
উপজেলার সরকারি স্কুল কলেজ ও এমপিও ভুক্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বাসা ভাড়া নিয়ে নামে-বেনামে চালাচ্ছেন এই কোচিং বাণিজ্য। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম জানায়, অভিযান অব্যাহত থাকবে, প্রমান পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুর রহমান বলেন, পর্যায়ক্রমে সকল কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।