লিচুর মূল উপাদান জলীয় অংশ অনেক বেশি থাকে। এর বাইরে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট খুব অল্প পরিমাণে থাকে। ফ্যাট না থাকয় সবার জন্য উপকারি একটি ফল। কম ক্যালরি সম্পন্ন এই ফল সবাই খেতে পারে। তবে যাদের মিষ্টি খাওয়া কিছুটা ঝুঁকির অর্থাৎ ডায়াবেটিস রোগী, তাদের জন্য এই ফল কিছুটা কম খাওয়াই ভালো।
লিচুতে ভিটামিস-সি, ক্যালসিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। এছড়া অন্যান্য খনিজ উপাদানগুলো হচ্ছে- আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদানগুলো যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। এ কারণে দৈনন্দিন পুষ্টিচাহিদা মেটাতে লিচু অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। তাই মৌসুমি ফলগুলো যতটা সম্ভব আমাদের জন্য খাওয়াটা খুবই উপকারি।
মৌসুমী ফলের সময় এখন। তাই বাজারে অন্য ফলের পাশে লিচুও পাওয়া যাচ্ছে বেশ। এই রসালো ও সুমিষ্ট ফলের আছে অনেক পুষ্টিগুণ। লিচু শরীরের জন্য কতটা উপকারি জেনে নেবো চলুন-
* লিচু ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে। এতে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্লেভনয়েড আছে যা ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
* লিচুতে থাকা ওলিগোনোল নামের একটি উপাদান যা হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
* হজম প্রক্রিয়া ভালো করে লিচু। আপনি যদি প্রায় সময় কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাহলে লিচু উপকারি হতে পারে আপনার জন্য।
* চোখের ছানি পড়া রোগ প্রতিরোধ করতে লিচু সহায়ক, তেমনটা জানা গেছে এক গবেষণায়।
* লিচুতে অ্যান্টি ভাইরাল উপাদান থাকে। তাই এ ফল ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস প্রতিহত করে।
* এই ফলে ফ্যাট থাকে কম, পানি থাকে প্রচুর, ফাইবারও থাকে অনেক। তাই এই ফল ওজন কমাতে সহায়ক হয়।
* লিচুতে ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, কপার, ভিটামিন সি থাকে অনেক। সে কারণে এ ফল রক্ত প্রবাহ নির্বিঘ্ন করে।
* শরীর ব্যথা ও শরীরের নষ্ট কোষ সারাতে লিচু উপকারি।
* লিচু যেমন পুষ্টিকর খাবার তেমনি এটি শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায়।
* কফ, কাশি দূর করতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে লিচু অনেক উপকারি।
* লিচুতে ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, কপারের উপস্থিতি বেশি থাকায় এটি হাড় মজবুতেও সহায়ক।
* অ্যানিমিয়া বা রক্ত স্বল্পতা দূর করতেও লিচু উপকারি।
* লিচুতে পটাশিয়াম ,কপার ও ভিটামিন সি বেশি থাকায় কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে এই ফল যৌন ইচ্ছা বাড়ায়।
সতর্কতা
লিচু খুব পুষ্টিকর খাবার হলেও কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণও হতে পারে। এতে চিনির উপাদান প্রচুর থাকায় যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের পরিমিত লিচু খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদের লিচু বর্জন করা উচিত। লিচু হরমোনের ভারসাম্য কিছুটা নষ্ট করে। তাই বেশি লিচু খেলে শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ, জ্বর ও অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে কারণে পরিমিত খেতে হবে এই ফল।
শিশুর মায়েরা যারা বুকের দুধ পান করান শিশুদের, তাদের লিচু না খেতেই বলেন ডাক্তাররা। কারণ লিচু শিশুদের হেমোরেজ ও ইনফেকশনের জন্য দায়ী হতে পারে। খালি পেটে কাঁচা লিচু খেলে শিশুদের নানা স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।