‘বিশাল এক বায়ুসমুদ্রের তলদেশে আমরা ডুবে আছি।’ কথাটি বলেন ব্যারোমিটারের উদ্ভাবক বিজ্ঞানী টরিসেলি। আসলেই তাই। সেই সমুদ্রের তলদেশে আমরা মানুষ বাস করছি পিঁপড়ার মতো। আর আমাদের নিয়ে মহাকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে পৃথিবী (আর্থ) নামক গ্রহটি। আর পৃথিবীর চারপাশ ঘিরে আছে বায়ুমন্ডল। যার চার ভাগের তিন ভাগই আছে ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটারের মধ্যে। আরও দূরে যেতে থাকলে ক্রমেই ছোট হয়ে আসে বায়ুর পুরুত্ব।
পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের একটি রেখার নাম কারমান রেখা। একে বহিস্থ মহাকাশ আর পৃথিবীর মধ্যের সীমানা ধরা হয়। এর দূরত্ব পৃথিবীর ব্যাসার্ধের ১.৫৭ অংশ। তবে মহাকাশযান পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় কিন্তু ১২০ কিলোমিটার দূরে থাকতেই বায়ুমন্ডলের কণার সঙ্গে ধাক্কা খেতে শুরু করে।
এ ধাক্কায় যেন ক্ষতি না হয় সে জন্যও মহাকাশযানে বিশেষ ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থাকে। তাহলে পৃথিবীর বায়ুমন্ডল আসলে কোন পর্যন্ত? ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA) এ কাজে ব্যবহার করেছে সোহো অবজারভেটরির ২০ বছরের পুরোনো উপাত্ত। তারা জানিয়েছে, পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একেবারে বাইরের অঞ্চলের নাম জিওকরোনা। আর এ জিওকরোনার বিস্তৃতি চাঁদের সীমানা থেকেও বহুদূরে। জিও কথার অর্থ পৃথিবী। আর করোনা মানে মুকুট। অর্থাৎ জিওকরোনার অর্থ দাঁড়ায় পৃথিবীর মুকুট।
জিওকরোনার কথা বিজ্ঞানীরা আগেও জানতেন। জানতেন, এটা মূলত হাইড্রোজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। তবে ঠিক কত দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে সেটা জানা ছিল না। এবার জানা গেল চাঁদের কক্ষপথ থেকেও প্রায় দ্বিগুণ দূরত্ব পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব হলো ৩ লাখ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। আর জিওকরোনার বিস্তৃতি ৬ লাখ ৩০ হাজার কিলোমিটার। দূরত্বটা পৃথিবীর ব্যাসের ৫০ গুণ। তার মানে চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে পাক খাচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ভিতরে থেকেই।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।