

এস এম তাজাম্মুল, মণিরামপুরঃ ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে গেলো বছরের ৫ই আগষ্ঠে দেশ হতে শেখ মুজিবের কন্যা সৈরাচারী হোতা শেখ হাসিনার পলায়নের সাথে সাথে সৈরাশাষক আ’লীগের মফস্বল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা সব আত্মগোপন গেলে দেশব্যাপী সাংগঠনিক কার্যক্রমে ভাঁটা পড়েছে ক্ষমতাচ্যুত আ’লীগের। তথ্য মোতাবেক,২৪’শের আ’লীগ হঠাও একদফা আন্দোলনের সময়ে ক্ষমতাচ্যুতদের বিভিন্ন স্থাপনা, ভিত্তি প্রস্থর,শেখ মুজিবের ভার্ষকার্য্য,এমনকি সৈরাশাষক আ’লীগের নেতা কর্মীদের নাম সম্বলিত উদ্বোধনী ফটকসমূহ ভেংগে পড়ে থাকতে দেখা গেছে,যা গোটা দেশে এখনো দৃশ্যমান আছে।
বিগতদিনে রাজনৈতিক,সামাজিক,ব্যাক্তিগত বিভিন্ন অপরাধ ও অপকর্মের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত আ’লীগ সরকারের শতকরা ৮৫% নেতারা পলাতক থেকে গায়েবানা ভাবে তাদের অস্তিত্ব জানান দিতে ঝটিকা মিছিল,হামলা,অপপ্রচার সহ নানান পন্থা অবলম্বন করে প্রত্যেকে স্বীয় কৃতকর্মের দায়ে জনসাধারণের কাছে তারা (আ’লীগ) এখন ফ্যাসিস্ট হিসাবেই বিবেচিত।
দেশব্যাপী ফ্যাসিস্টদের অস্তিত্বের জানান দেওয়ার তেমনি তথ্য লোপাট করা একটি ব্যার্থ প্রচেষ্টার গোপন রহস্য উন্মোচনে আজকের এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বৃহত্তর যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের বাংলায় ক্রীড়া লিখতে না পারা ক্রীড়া শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে। মহান এ পেশার প্রতিটি ব্যাক্তির আকাশ ছোয়া সন্মানকে মাটিতে নামিয়ে তিনি ইতিপূর্বেই প্রমান করেছেন তিনি ক্রীড়া বানানটি নিজেই লিখতে জানেন না।
অভিযোগ উঠেছে,৫২তম জাতীয় স্কুল,মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীস্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৫ এর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফুটবল টুর্নামেন্ট (ইন্টারস্কুল) ছেলেদের মধ্যকার গত ১৭ই সেপ্টঃ মণিরামপুর উপজেলার ভরতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় বনাম গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের মধ্যকার অনুষ্ঠিত ম্যাচে গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের ফুটবলাদের জার্সিতে শেখ মুজিবের ছবি (মুজিব শতবর্ষ) ব্যাবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুরাতন বছরের জার্সিতে মুজিব শতবর্ষের নির্দিষ্ট করা শেখ মুজিবের ছবি সম্বলিত হওয়া সত্বেও সেটা ব্যবহার করাটা নিছক ভুল বলে দাবী করেছে কর্তৃপক্ষ। গোপনসূত্রে জানা গেছে,এ ঘঠনার তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি জানতে পেরে ঐ প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের (এমপি) হাত ধরে চাকুরীতে আসা অভিযুক্ত ক্রীড়া শিক্ষক আসাদুজ্জামান ইতিমধ্যে ঐ বিতর্কিত জার্সি প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে ফেলেছে বলে শোনা যাচ্ছে।
তবে অনুসন্ধানী টিমের সদস্যরা বলছেন,যদি ভুলই হবে তাহলে ম্যাচ সংক্রান্ত তথ্য বা ফুটেজ সংগ্রহে কেনো এতো জটিলতা! নাকি গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের নিয়োগকৃত ক্রীড়া শব্দটি লিখতে না পারা ক্রীড়া শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান সৈরাচারের অস্তিত্ব জানান দেওয়াটা ছিলো তার মূল উদ্দেশ্য!
জাতীয় এমন একটি ইস্যু নিয়েও ঐ জার্সিটি পরিবর্তন বাদেই জার্সিটিই আবারও পরিধান করে শেষ হয় গত বুধবারের ধূম্রজালের ফুটবল ম্যাচটি।এমনই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভরতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মোঃ মজনুর রহমান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ক্রীড়া শিক্ষক আসাদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবোনা।আপনি প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে যোগাযোগ করেন।
খোজ নিতে গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজে গেলে জানা যায়, অধক্ষ্য মোঃ রেজাউল ইসলাম অসুস্থতার ছুটিতে থাকার সুবাধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পলাশ দাস নিজেও বিষয়টি এড়িয়ে যেয়ে খেলোয়াড়দের উপর দোষ চাপিয়ে বলেন, খেলোয়াড়রা মনে হয় জার্সি বের করেছিলো!তিনি নতুন জার্সি দেখিয়ে বলেন-এই যে সভাপতি সাহেব ঢাকা থেকে নতুন জার্সি পাঠিয়েছে। আপনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলতে পারেন। ব্যাবসায়িক কাজে রাজধানী ঢাকাতে অবস্থান করা সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সাথে ফোনকলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এটা একটি ভুল ও সাধারণ বিষয়। সকলের সামনে ক্রীড়া শিক্ষক আসাদুজ্জামান ক্ষমা চেয়েছেন আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি। এসব নিয়ে আপনারা কি লিখবেন!
দুঃখজনক হলেও তথ্য অনুযায়ী এ বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেউই অবগত ছিলেন না বলে জানা গেছে। কিন্তু শেখ মুজিবের ছবি সম্বলিত জার্সির বেপারে গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও ভারপ্রাপ্ত অধক্ষ্য পলাশ দাসের এড়িয়ে যাওয়ার নেপথ্যে ঐ ক্রীড়া লিখতে না পারা ক্রীড়া শিক্ষক আসাদুজ্জামানের করা পরিষ্কার অপরাধের ধূম্রজালের পর্দার আড়ালে গণমাধ্যম ও স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের অর্থ লেনদেনের রহস্যের মৃদু গন্ধ ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবক মহলে।
মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম জিল্লুর রশীদ নিজেউ বললেন,যেটা হয়েছে প্রেক্ষাপট অনুযায়ী উচিত হয়নি,আমরা ব্যাবস্থা নিবো।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না জানান,এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।খোজ নিয়ে আমরা এ বিষয়ে পরে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।
এদিকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের করা ক্ষমতাচ্যুতদের নিজস্ব গুপ্তচর ভিত্তিক এহেন কর্মকান্ড ইচ্ছাকৃত ও সৈরাচারের ইন্দন ! সৈরাচার হঠাও একদফা আন্দোলনে অংশ নেওয়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সচেতন মহলের ব্যাক্তিবর্গদের পক্ষ থেকে এমনই মন্তব্য শুরু হয়েছে ঘঠনার তথ্য সংগ্রহে। গুপ্ত এ কর্মকান্ডের উপযুক্ত ব্যাবস্থা না নেওয়া হলে মন্তব্যকারীরাও বিষয়ে আরো উচ্চতর ব্যাবস্থার দাবী জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

ডেইলি কলমকথার সকল নিউজ সবার আগে পেতে গুগল নিউজ ফিড ফলো করুন
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।