দুটি নেটে সমানতালে ঝড় তুলছেন ফরচুন বরিশালের নুরুল হাসান সোহান ও তৌহিদ হৃদয়। নেটের পাশেই ছাতার নিচে সাদা টি-শার্ট পরে সাকিব আল হাসান ব্যস্ত মুঠোফোনে। হয়তো মজেছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো অ্যাপসে কিংবা তার অতি প্রিয় কাজ গাড়ির ভিডিও দেখা! কিন্তু চার ম্যাচে তিন হারের পর অনুশীলনে সাকিব তো এভাবে বসে থাকার নয়!
নিজের অনুশীলন আগেই সেরে নিয়েছেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব। দলের আগে সাগরিকার পাড়ে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এসে ব্যস্ত সময় কাটান বাঁহাতি অলরাউন্ডার। বরিশালের দলটি সাকিব নিজের হাতে গুছিয়েছেন। তাই দায়িত্বটাও বেশি। নিবিড়ভাবে একক অনুশীলনের পর সাকিব হয়ে যান দলের মেন্টর।
প্রথমে অনুশীলন নিয়ে কিছু শব্দ খরচ করা যাক। তারপর নাহয় মেন্টরশীপের গল্প। সাকিবের অনুশীলন ভাগ করা যাবে দুভাগে। প্রথম পর্বে বিরক্ত সাকিবের দেখা মিলবে৷ পরে পাওয়া যাবে তৃপ্ত সাকিবকে। এই অনুশীলনে তার সঙ্গী ছিলেন থ্রোয়ার রমজান আলী ও বরিশালের সহকারী কোচ আশিকুর রহমান। দুজনেই সাকিবকে বল ছুঁড়েছেন।
শুরুতে সাকিবকে দেখা গেছে ছন্দহারা। ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না ঠিকঠাকভাবে। যেভাবে শট খেলতে চাচ্ছিলেন সেভাবে হচ্ছিল না। কখনো কানায় লাগে, কখনো মিস টাইমিং; কখনো বাউন্সার এসে আঘাত করে হেলমেটে; বারবার এমন হওয়াতে বিরক্তির চাপ ফুটে ওঠে চেহারায়। অল্পকিছুক্ষণ ব্যাটিং করে মিনিট পাঁচেকের মতো বিশ্রাম করেন।
বিশ্রামের পর আবার নামের ব্যাটিংয়ে। এবার শুধু তৃপ্ত সাকিবের গল্প। যেভাবে চাচ্ছিলেন সেভাবেই যেন সবকিছু হচ্ছিল। বিরতি থেকে এসে পাওয়ার হিটিংয়ে পুরো মনোযোগ দেন সাকিব। রমজান-আশিকুর যেভাবেই বল দিচ্ছিলেন, সাকিব স্বাচ্ছন্দ্যে খেলছেন মাঠের চারপাশে। মিড উইকেট, লং অন এবং লং অফ; সব দিক দিয়েই দারুণ কিছু শটস খেলেন। এভাবে দুই ভাগে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক অনুশীলন করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
দল আসার পর ফুটবল খেলেন এক সঙ্গে। বরাবরই ফুটবল খেলায় সাকিবকে দেখা যায় উদ্দীপ্ত। আজও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। একটি গোলও পেয়েছেন বরিশালের অধিনায়ক। সতীর্থরা যখন নেটে অনুশীলনে মনোযোগ দেন, সাকিব তখন নেটের পাশে পাতা চেয়ারে মুঠোফোন নিয়ে ব্যস্ত। কিছুক্ষণ এভাবে কাটানোর পর দেখা যায় মেন্টরের ভূমিকায়। সঙ্গী ছিলেন বরিশালের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন।
নেট হাত ঘুরাচ্ছিলেন ইংলিশ স্পিনার জ্যাক লিনটট ও দেশি স্পিনার নাঈম হাসান-তাইজুল ইসলামরা। আর রোটেশন করে ব্যাটিংয়ে ছিলেন ইরফান শুক্কুর, ফজলে মাহমুদ ও জিয়াউর রহমানসহ সোহানরা। সাকিব তখন সুজনের সঙ্গে কথা বলছেন, আর মনোযোগ সতীর্থদের অনুশীলনে। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে পর্যবেক্ষণের পর কথাও বলেন সতীর্থদের সঙ্গে।
দল হাতে চেনা সাকিবকে দেখা গেলো বিপিএলের তিন ম্যাচে ব্যাট হাতে ছিলেন ব্যর্থ। তিন ম্যাচে আউট হয়েছেন ১৩, ২৩ ও ১ রান করে। প্রথম ম্যাচে দল জিতলেও পরের দুটিতে হার?
২৯ জানুয়ারি দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল। তার আগে আরও একদিন সাকিবরা দল জয়ের ধারায় ফেরার জন্য সাকিবের ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠার কোনো বিকল্প নেই। সাগরিকার পাড়ে সাকিব কি পারবেন পুরোনো চেহারায় ফিরতে?
কলমকথা/ সাথী
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।