আবহাওয়া বার্তাঃ শীতের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে। আম্ফান, ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড়গুলোর পর এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় “জাওয়াদ”।
ধারণা করা হচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ “নাগাদ” ঘূর্ণিঝড় “জাওয়াদে” পরিণত হবে।সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
তবে এটা মূলত বাংলাদেশে নয়। এটা আছেড়ে পড়বে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও দক্ষিণ উড়িষ্যার দিকে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’।
থাইল্যান্ড থেকে আন্দামান সাগর হয়ে বঙ্গোপসাগরে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। এর জেরে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় অতিভারী বৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।শনিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে এ ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়তে পারে বলে ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে,শুক্রবারে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় আরও শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে সেই গভীর নিম্নচাপ।ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশমুখী হবে কি না, এ বিষয়ে জানতে অপেক্ষা করতে হবে শনিবার পর্যন্ত।
তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর ইতিমধ্যে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে। আর মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, গভীর সমুদ্রে বিচরণ না করতে।
ভারতীয় আবহাওয়া অফিস শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ২টার বুলেটিনে জানায়, বেলা সাড়ে ১১টায় পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের ওপর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে, যা শনিবার সকালের দিকে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ ওড়িশার মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোনসংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থার (ইএসসিএপি) তালিকা অনুযায়ী এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে ‘জাওয়াদ’। নামটি প্রস্তাব করেছিল সৌদি আরব।
ভারতীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, জাওয়াদের প্রভাবে উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। রাজ্যগুলোয় ইতিমধ্যে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৪৬টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। আরও ১৮টি দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জাওয়াদ বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে কি না, এ বিষয়ে এখনও পর্যালোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা । আবহাওয়াবিদরা বলেছেন,‘এই ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে আমরা আগামীকাল (শনিবার) জানাব। তবে বাংলাদেশে এর কিছুটা প্রভাব অবশ্যই থাকবে।’
শৈত্যপ্রবাহের কথা উল্লেখ করে এই আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, চলতি মাসের মাঝামাঝিতে দেশে শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের সবশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় প্রথমে নিম্নচাপ এবং পরবর্তী সময়ে গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সকালের দিকে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।