আষাঢ় মাস, ভরা বর্ষা মৌসুম। চলনবিল জুড়ে নেই কোন পানির চিহ্ন। অথচ পানিতে ভরপুর থাকার কথা। এ সময় চলনবিল থাকে তার চিরচেনা রূপে। সেই সম‌য়ে জেলেরাও থাকে মহাআনন্দে।

কারণ ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পরে জেলেদের জালে। কিন্তু পানির অভাবে এখন অলস সময় পার করছেন তারা। নেই পানি তাই তেমন কোন মাছও নেই।

বাংলা পঞ্জিকা মতে আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস মিলে বর্ষা ঋতু। আর বর্ষা মানেই মুষলধারে বৃষ্টি, চলনবিলের খাল বিলে পানি থৈ থৈ করে ডুবে থাকা, এ যেন এক চিরচেনা দৃশ্য। অথচ আজ এই মাঝ বর্ষাতেও মিলছে না বৃষ্টি, তাই চলনবিলের খালেও পানি নাই। হতাশ হয়ে পড়েছেন চলনবিল অঞ্চলের জেলেরা।

পানি না থাকলে তারা কিভা‌বে মাছ ধরবে এই চিন্তায় হতাশাগ্রস্ত চলনবিলের জেলেদের বাড়িতে বসে বসে পানির অপেক্ষা করছে। তা‌দের অ‌পেক্ষা কখন পানি আসবেতে‌ ত‌বেই মাছ ধরতে পা‌র‌বে।
চলনবিল অঞ্চলের নদীতে জোয়ারের পানি থাকলেও পা‌নি নেই খাল-বিলে, তারপরও নেই বৃষ্টি। তীব্র তাপমাত্রায় জন-জীবন অতিষ্ঠ।

এক সময় বর্ষা মৌসুম আসলেই চলনবিল পানিতে টইটুম্বুর হয়ে যেত। মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে মাছ ধরতে মে‌তে থাক‌তো জে‌লেরা। মিলতো নানা প্রজাতির মাছ। সেই মাছ স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে আবার দেশ-বিদেশে রপ্তানি হতো।

হাসি খুশিভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে স্বচ্ছলভাবে দিন কাটাতো তারা। কিন্তু জে‌লে‌দের মু‌খে হা‌সি নেই প্রকৃ‌তির এই বৈরী আচরণে। কিভাবে চলবে তাদের সংসার এই চিন্তায় তারা দি‌শেহারা।

কুন্দইল গ্রা‌মের জে‌লে আ‌জিজল ব‌লেন, চলন‌বি‌লে পা‌নি নেই, মাছ ধর‌বো কোথায়! এক সময় চলনবিলে পানি থৈ থৈ করতো। কিন্তু এখন মাঝ বর্ষাতেও পানি পাচ্ছি না এমন‌কি বৃ‌ষ্টিও হ‌চ্ছে না।

বর্ষার আগেই আমরা মাছ ধরার জন্য ঝাঁকি জাল, ধুন্দি, চাঁই, দোয়ার, পলোসহ বি‌ভিন্ন ধরনের যন্ত্র তৈরি করে রাখি। কেননা বর্ষার আগমন হলেই শুরু হয় আমাদের মাছ ধরার কাজ। আর সেই মাছ ধরেই চলে আমা‌দের জীবন জীবিকা।

বিল পাড়ের শ‌ফিকুলসহ অ‌নে‌কেই ব‌লেন, বছরের অন্য মৌসুমে অন্যের জমিতে কাজ করে তা‌দের সংসার চলে। বর্ষা মৌসুম এলেই শুরু হয় তাদের মাছ ধরা।

স্থানীয় বাজারসহ দেশজুড়ে চলে মাছ কেনা বেচার কাজ। এখানে বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু এবার মাঝ বর্ষার হলেও চলনবিলে পানি আসেনি।

বিলপা‌ড়ের মানু‌ষেরা জানান, যত দ্রুত চলনবিলে পানি আসবে, ততই তাদের মঙ্গল।