স্টাফ রির্পোটার, মণিরামপুর (যশোর) থেকেঃ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার পারখাজুরা গ্রামের মৃত আরশাদ আলীর ছেলে আকবর আলী সানা হত্যা মামলার আসামী মোঃ রহিমা বেগম (৩২) কে গ্রেফতার করেছে  পিবিআই যশোর। গত ২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাত আনুমানিক ১০:৩০ মিনিটে কেশবপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের তার পিতার বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।

 

জানাযায়, আকবর আলী পেশায় একজন ভাংগাড়ী ব্যবসায়ী গত ১৪ ফেব্রুয়ারী বাগেরহাট জেলা হতে ব্যবসা শেষে তার নিজ বাড়িতে আসেন। আকবর আলী ও তার স্ত্রীর মধ্যে সংসারে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। গত ২১শে ফেব্রুয়ারি রাতের খাবার শেষে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ঐইদিন আনুমানিক ভোর ৪:৪৫ মিনিটে তার স্ত্রীর কান্নার শব্দ শুনে তার বাড়িতে ছুটে আসেন আকবর আলীর আপন ভাই আদম শফিউল্লাহসহ আশেপাশের লোকজন এসে দেখতে পান আকবর আলীর ঘরের দরজা বন্ধ পরবর্তী দরজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে দেখেন আকবর আলীর গলায় গামছা পেঁচানো মৃতদেহ পড়ে আছেন পাশে বসে কান্না করছেন তার স্ত্রী। খবর পেয়ে মনিরামপুর রাজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বানি ইসরাইল ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেন এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। ময়না তদন্ত সম্পন্ন শেষে আকবর আলী সানা’র মৃতদেহ সৎকারের জন্য তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে মনিরামপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা রজু হয়।

পরবর্তীতে আকবর আলী সানা’র ময়না তদন্তের রির্পোটে বলা হয় তিনি আত্মহত্যা নয় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আকবর আলীর আপন ভাই মোঃ আদম শফিউল্লাহ (৪৫) বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় মামলা করেন। উক্ত মামলাটি পিবিআই যশোর জেলা স্ব-উদ্যোগে মামলার তদন্তভার এস,আই মোঃ হাবিবুর রহমানের উপর অর্পণ করা হয়। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা সঠিক তত্ত্বাবধান দিক নির্দেশনায় এস,আই মোঃ হাবিবুর রহমানের সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ যশোর চৌকস দল অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মোছাঃ রহিম বেগম (৩২) কে তার বাবার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানাযায়, অভিযুক্ত রহিমা বেগমের স্বামী আকবর আলী সানা পেশায় একজন ভাংগাড়ী ব্যবসায়ী। কিছুদিন আগে বাগেরহাট জেলা হতে ভাংগাড়ী ব্যবসা শেষে নিজ বাড়িতে আসেন আকবর আলী। তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। ভিকটিম আকবর আলী সানা অভিযুক্ত মোছাঃ রহিমা বেগমের সাথে শারীরিক মেলামেশা করতে চাইলে অভিযুক্ত তাতে রাজি না হওয়ায় আকবর আলী অভিযুক্তকে মারপিট করে। এতে রহিমা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামী আকবর আলী সানার সাথে ধস্তাধস্তি করে এবং ভিকটিমের মুখে আঘাত করে। ধস্তাধস্তির সময় ভিকটিম আকবর আলী সানা শয়নরত খাটের সাথে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়। একপর্যায়ে অভিযুক্ত রহিমা বেগম তার নিজ ঘরের মধ্যে তার ব্যবহৃত ওড়না ভিকটিমের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মর্মে স্বীকার করেন।

অভিযুক্ত রহিমা বেগমকে অদ্য ৩ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব শম্পা বসু যশোর আদালতে সোপর্দ করা হলে অভিযুক্ত ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।