১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নেত্রকোনার কুখ্যাত রাজাকার খলিলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রাতে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে খলিলুর রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন।

২৫২ পৃষ্ঠার রায়ে খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ৪টি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড ও একটি অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি তিনি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

এ বিষয়ে বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক। ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মামলার পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

মামলার ৫ আসামি হলেন- রমজান আলী, মো. খলিলুর রহমান, খলিলুর রহমানের ভাই মো. আজিজুর রহমান, আশক আলী ও মো. শাহনেওয়াজ। তাদের মধ্যে রমজান আলী, আজিজুর রহমান, আশক আলী ও মো. শাহনেওয়াজ মারা গিয়েছেন। এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণচেষ্টা, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগপত্রে ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত চারজনের মধ্যে দুজনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪-১৫টি বাড়িতে লুটপাট ও সাতটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করা হয়।

খলিলুর রহমান ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরে চন্ডিগড় ইউনিয়নে আল বদর বাহিনীর কমান্ডার হন। বর্তমানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক।