তৈয়বুর রহমান কিশোর,বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে সংসার চালায় ১০ বছরের কিশোর আরাফাত। যে বয়াসে স্কুলে যাওয়া এবং খেলাধুলা করার কথা সেই কিশোর বয়াসে মা, ভাই, বোনকে নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আরাফাত।
পড়াশুনা, খেলাধুলোর বয়াসে আরাফাত কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের ভার। প্রতিদিন ১০০ টাকা মুজুরি পায় সে। তা দিয়ে সংসার চালাতে হয় তাকে। চার ভাই বোনের মধ্যে আরাফাত বড়। তার বাবা দাউদ শেখ গত ৪ বছর আগে মারা যায়। সে হাটখোলাচর গ্রামের হাওয়াই মিঠাই তৈরি কারিগর গফফারের নিকট থেকে এই মিঠাই এনে বিক্রি করে। এতে গফফার তাকে প্রতিদিন ১০০ টাকা বেতন দেন। তাদের নেই কোন জমি জমা। তার মা বিধাব হলে ও তারা অসহায় হলেও তাদের কপালে জুটেনি একটি শিশু কার্ড বা তার মায়ের বিধাব ভাতা। কখনও খেয়ে কখনও না খেয়ে কাটাতে হচ্ছে তাদের।
আরাফাত শেখ বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হাটখোলাচর গ্রামের মৃত দাউদ শেখের ছেলে। পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে সে বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌরসভার কামারগ্রামের আখড়া এলাকায় শিশু কিশোরদের কাছে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করতে দেখা যায় এই শিশুকে। আরাফাত শেখ জানায়, অল্প বয়াসে তার বাবা মারা গেছে, মা,ভাই, বোনকে নিয়ে সংসারের দায়িত্ব তুলে নিয়েছে কাঁধে। সে বলে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে। সে পায় ১০০ টাকা। প্রতি পিচ হাওয়ায়
মিঠাই বিক্রি করে ১০ টাকা করে। সে জানায়,বোয়ালমারীতে হাওয়াই মিঠাইর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। আগে
গ্রামাঞ্চলে বিক্রি ভালো হলেও বর্তমানে বোয়ালমারী পৌর শহরে বেঁচাকেনা ভালো হচ্ছে। বর্তমানে তাকে উপজেলা নিউ মডেল একাডেমি, বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,জর্জ একাডেমীর সামনে নিয়মিতভাবে বিক্রি করতে দেখা যায়।
আরাফাত জানান, বিশেষ করে শিশুরাই এর প্রধান ক্রেতা। পাঁশাপাশি অনেক লোক বিভিন্ন বয়াসী মুরব্বিরাও এই খাবারটি পছন্দ করেন। মুখে দেওয়া মাত্রই এই খাবারটি গলে যায়, যে কারণে অনেকের কাছে এই খাবারটি প্রিয়। সে আরও বলে, সরকারি যদি কোন সুযোগ পেতাম বা কোন বৃত্তবানযদি আমাকে সহযোগিতা করতো তা হলে আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারতাম। ময়না ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইমদাদ শেখ বলেন, করোনার সময় কোন ভাতা না আসায় দেওয়া হয়নি। সামনে দেখা যাবে। তবে তাদের কোন জমিজমা নেই এবং তারা অসহায় সে কথা তিনি জানান।
ময়না ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক মৃধা বলেন, আরাফাতরা কোন সরকারী সুবিধা পায় কি না তা আমার জানা নেই। ওই ওয়ার্ডের মেম্বার বলতে পারবে ভালো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসাইন বলেন, তারা কোন সরকারী সুযোগ সুবিধা পায়নি তা আমাকে কেউ বলেনি। যেহেতু জানতে পারলাম যাতে পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।