শেখ খায়রুল ইসলাম নিজস্ব প্রতিবেদক: উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা জরুরি বলে মনে করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন(বিএফইউজে)’র সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল।তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট নানা কারণে উপকূলের পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে যে বিষয়গুলো নীতি- নির্ধারকদের দৃষ্টিতে তুলে আনা সম্ভব।মঙ্গলবার গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ‘পরিবেশ ও উপকূল’ বিষয়ক দু’দিনের অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন তিনি।ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং সুন্দরবন ও পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র।আলোচনায় অংশ নেন সিপিআরডি’র প্রধান নির্বাহী মোঃ সামসুদ্দোহা, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার্স মো. নূর আলম শেখ,বিএফইউজে’র যুগ্ম মহাসচিব হেদায়েত হোসেন মোল্লা, ডিইউজে’র সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, কোষ্টাল ভয়েসের সাধারণ সম্পাদক কৌশিক দে,উন্নয়নকর্মী মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমূখ।
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বিষয়টি খুবই চ্যালেঞ্জিং।কারণ উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ,প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত যাচাই- বাছাইয়ের পর দেশ ও জাতির স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি ও তা প্রকাশের করতে হয়। একইভাবে পরিবেশ বিষয়ে লেখার জন্য অনেক বেশি জানা ও বোঝার বিষয় রয়েছে। কারণ পরিবেশ শুধু একটি নির্দিষ্ট বিষয় ঘিরেই থাকে না।পরিবেশ যে বিষয়ের উপরই লেখা হোক না কেন, তার সাথে জড়িয়ে থাকে পারিপার্শ্বিক আরো অসংখ্য বিষয়।
তৃণমূলে দায়িত্ব পালনকারি সাংবাদিকরা প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে ওই সকল বিষয়ে সতর্ক থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সিপিআরডি’র প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা বলেন,জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সারাদেশে পরিবেশগত সংকট বাড়ছে। নদী বিধৌত এলাকায় বন্যা ও নদী ভাঙ্গন চলছে। অন্য এলাকায় খরা দেখা দিচ্ছে। আবার চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন শহরে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সাগরে পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলে লবণাক্ততা বাড়ছে। ফলে জজীবিকা হারাচ্ছে এবং মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অথচ অভিযোজনের নামে যা করছি,তা মোটেও অভিযোজন নয়। উপকূলীয় অঞ্চলে সাংবাদিকতা করার ক্ষেত্রে এই সকল বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে নদ-নদী ও পরিবেশ রক্ষার সাংবাদিকদের আরো বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান বাপা নেতা মোঃ নূর আলম। তিনি বলেন,সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয় না।আবার পরিবেশ সুরক্ষায় আইন থাকলেও সেই সকল আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই।আইন ও নীতিমালার তোয়াক্কা না করে প্রভাবশালীরা নদী ও জলাশয় দখল করে নিচ্ছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে এমন বিষয়গুলো জনসমুক্ষে তুলে আনার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়,উপকূলের সকল জেলা ও উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।প্রথম দফা প্রশিক্ষণে ৩১ জন সাংবাদিক অংশ গ্রহণ করেন।চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে দ্বিতীয় দফা প্রশিক্ষণে আরো ৩০জন সাংবাদিক অংশ নিবেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।